শেবাচিমে রোগী ভর্তিতে ৬ হাজার টাকা আদায়, পুলিশ সদস্য আটক !

কামরুন নাহার | ০০:৩১, জানুয়ারি ১৫ ২০২০ মিনিট

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে রোগী ভর্তিতে ১১টাকার পরিবর্তে ৩০ থেকে ৫০ টাকা রাখার ঘটনা অনেক পূর্বে থেকেই আলোচিত। তবে পূর্বের সেই আলোচনাকে বাদে ফেলেছেন এক আরআরএফ পুলিশ সদস্য। তিনি ৫০ বা ১০০ টাকা নয়, একজন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির জন্য হাতিয়ে নিয়েছেন ৬ হাজার টাকা। কিন্তু টাকা হাতিয়ে নিয়ে শেষ রক্ষা করতে পারেননি পুলিশের ওই প্রতারক সদস্য। সর্বশেষ বিনা মূল্যের ওষুধের জন্য ১০ হাজার টাকা এবং অপারেশনের জন্য ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা কালে ধরা পড়েছেন তিনি। মঙ্গলবার শেবাচিম হাসপাতালের উপ-পরিচালকের হস্তক্ষেপে শামীম হোসেন নামের ওই পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়। পরে তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। পুলিশের হাতে আটকের পরে মুক্তি পাওয়া প্রতারক শামীম হোসেন ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার উত্তমপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং বরিশাল আরআরএফ পুলিশের সদস্য। প্রতারণার শিকার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজীরহাট থানাধীন সন্তোষপুর গ্রামের বাসিন্দা মকবুল হোসেনের স্ত্রী রাখি খানম (২৪) জানান, গত ৭ জানুয়ারি পিত্তে পাথর জনিত সমস্যা নিয়ে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হতে আসেন। একটু সুযোগ সুবিধার আশায় পূর্ব পরিচিত আরআরএফ পুলিশ সদস্য শামীমকে হাসপাতালে ডেকে আনেন। রাখি জানান, ‘শামীম পুলিশ সদস্য ও সরকারি লোক হওয়ায় কম খরচে এবং সল্প সময়ের মধ্যে চিকিৎসা করানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এজন্য তিনি ভর্তির রেজিষ্ট্রারে রাখির স্বামীর নাম এবং ঠিকানার পরিবর্তে শামীমের নাম-ঠিকানা লেখান। ওই পরিচয়ে জরুরী বিভাগ থেকে ভর্তির সময় বিনামূল্যের টিকেট গ্রহন করেন পুলিশ সদস্য শামীম। কিন্তু ভর্তিসহ আনুসাঙ্গিক খরচের জন্য ওই রোগীর কাছ থেকে আদায় করে নেন ৬ হাজার টাকা। পরবর্তীতে হাসপাতালে প্যাথলজী এবং রেডিওলজীতে রাখির বিনামূল্যে পরীক্ষা নিরীক্ষা করান শামীম। বিনিময়ে আদায় করে নেন আড়াই হাজার টাকা। সর্বশেষ দ্রুত অপারেশন এবং ওষুধ ক্রয়ের জন্য পৃথকভাবে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন পুলিশ পরিচয়ের আড়ালে প্রতারক শামীম। এর মধ্যে অপারেশনের জন্য ২০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তারা চিকিৎসকদের সঙ্গে অপারেশনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে প্রতারনার বিষয়টি আচ করতে পারেন। পরে রোগীর গ্রামের বাড়ির প্রতিবেশী শেবাচিম হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. ইউনুস’র এর স্মরণাপন্ন হন তারা। এরপর পরই ধরা পরে যান পুলিশ পরিচয়ে দালাল শামীম হোসেন হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, প্রতারক শামীমকে আটক করে থানায় প্রেরণের জন্য হাসপাতালে কর্মরত এসআই নাজমুলের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নাজমুল তাকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গার্ড রুমে আটকে রাখেন। কিন্তু পরে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন না করেই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। যদিও এসআই নাজমুল জানিয়েছেন, ঘটনাটি সমাধাণ করা হয়েছে। পরীক্ষাবাদ যে টাকাটা পুলিশের ওই সদস্য নিয়েছেন সেটা ফের দেয়া হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।