বরিশাল সদর
ঈদে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে ঢাকা-বরিশাল নৌপথ
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আসন্ন ঈদে দক্ষিনাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষই ঘরে ফিরবেন নদীপথে। তাই ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৪২টি নৌ রুটের প্রায় ২২০টি যাত্রীবাহী লঞ্চ। তবে কূল কিনারাবিহীন ঢাকা-বরিশাল নৌপথ আসন্ন ঈদে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। যেদিকেই চোখ যায় পানি আর পানি। টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানির ঢলে তা আরো ফুলে ফেঁপে উঠেছে। আর অন্যদিকে রয়েছে টানা বৃষ্টি। ফলে কুলকিনারাহীন হয়ে পড়েছে নদীপথ। বেড়েছে নদীর স্রোতও। তাই আসন্ন ঈদে ঢাকা-বরিশাল নৌপথ ঝুঁকিপুর্ন হয়ে ওঠার শঙ্কা করছেন মাস্টার ও চালকরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঝড়ের মৌসুম হওয়ায় এবং অবৈধ মালবাহী জাহাজের কারণে ঈদযাত্রা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠার শঙ্কা রয়েছে। ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের গুরুত্বপূর্ণ মিয়ারচর চ্যানেল দিয়ে প্রতিদিন শত শত যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করলেও নেই প্রয়োজনীয় পথ নির্দেশক বয়া বাতি। লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদ ভরা ঝড় মৌসুমে হওয়ায় কুলকিনারাহীন নদীতে বয়া বাতি না বসালে ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে নদীপথ। ঈদে সে ঝুঁকি আরও কয়েকগুণ বাড়াবে নৌ-পথে অদক্ষ চালক দিয়ে চলাচল করা মালবাহী নৌযান।
এদিকে বিআইডব্লিউটিএ বলছে, ঈদের আগেই পুরো নৌ-পথে বর্ষা-বাতি নিশ্চিত করা হবে। বিআইডব্লিউটিএর তথ্যানুযায়ী, পানি বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ সময়ের চেয়ে নৌ পথ দেড় গুণেরও বেশী বেড়ে প্রায় ৭ হাজার কিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। ফলে কোনটি নদীর মূল চ্যানেল আর কোনটি চর তা বুঝতে প্রায়ই হিমশিম খেতে হয় বলে জানিয়েছেন লঞ্চের মাস্টাররা। তাই মিয়ারচর চ্যানেল খুলে দেয়া ও শতভাগ পথ নির্দেশক না বসালে ঈদ মৌসুমে যে কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে শঙ্কা তাদের। লঞ্চ মাস্টারদের একজন বলেন, ‘কোনটা নদী কোনটা চর বোঝার কোনো কায়দা নেই। অনেক জায়গায় পর্যাপ্ত বয়াবাতি নেই। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, ‘পথ নির্দেশক বসাতে একটু সময় লাগে কারণ স্রোত এখন একটু বেশি। যদি দক্ষ মাস্টারকে দিয়ে লঞ্চ চালানো হয় তাহলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
অপরদিকে মালিকরা বলছেন, যাত্রীচাপে ঈদে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা হয়তো সম্ভব হবে না। সুন্দরবন লঞ্চের মালিক ও কেন্দ্রীয় লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘ঈদে সামাজিক দূরত্ব মেনে লঞ্চ চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। তারপরও প্রশাসনের সহযোগিতায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ মন্ত্রণালয় বলছে, নদী পথ নিরাপদ রাখতে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে কেউ যদি দক্ষ মাস্টার ছাড়া লঞ্চ চালায় তাহলে শক্ত ব্যবস্থা নেবে তারা। আর নৌ প্রতিমন্ত্রী বলছেন, সামাজিক দুরত্ব ও যাত্রা ঝুঁকিমুক্ত করতে কোন ছাড় দেয়া হবে না। লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা বলছেন এই বিপুল সংখ্যক মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে শুধু আশ্বাস নয়, প্রয়োজন ঝড় মৌসুম ও ঝুঁকিপূর্ণ মালবাহী নৌযানের কথা বিবেচনায় রেখে সবগুলো সংস্থার কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ। উল্লেখ্য, আসন্ন ঈদে এ পথের ৪২টি নৌরুটে প্রায় ২২০টি যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করতে প্রস্তুত রয়েছে।