বরিশাল সদর
বরিশাল নগরীতে ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা: মালিকসহ চার জনের কারাদণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক।। বরিশাল নগরীতে চিকিৎসকের ভুয়া স্বাক্ষরে প্যাথালজি রিপোর্ট তৈরী লাইসেন্স বিহীন দি মুন মেডিকেল সার্ভিসেস নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকসহ চার জনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই সাথে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে শহরের সাংবাদিক মাইনুল হাসান সড়ক (আগরপুর রোড) এর বরিশাল প্রেসক্লাব সংলগ্নে অবস্থিত ওই ভুয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি। শনিবার (২৫ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান এই দণ্ডাদেশ দেন। এতে সহযোগিতা করে বরিশাল সিভিল সার্জন কর্তৃপক্ষ। দণ্ডিতরা হলো- ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির মালিক ও রোগীর দালালদের সর্দার মো. হোসেন শাহীন ওরফে ঝাড়ুদার শাহীন, দালাল শ্যামল মজুমদার, তাদের সহযোগী ইব্রাহিম রানা এবং শ্যাম সাহা। এদের মধ্যে শাহিন ও শ্যামলকে ছয় মাস এবং অপর দু’জনকে তিন মাস করে বিনাশ্রম করাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এর আগেও দি মুন মেডিকেল সার্ভিসেস নামের ওই ভুয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। এসময় অর্থদণ্ড দিয়ে মালিক পক্ষকে সতর্ক করা হলেও দালাল নির্ভর প্রতিষ্ঠানটিতে রোগীদের চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে আসছিল। তথ্য নিশ্চিত করে মোবাইল কোর্ট অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান জানান, ‘জেলা প্রশাসনের নিয়মিত মোবাইল কোর্টের অংশ হিসেবে নগরীর আগরপুর রোডের দি মুন মেডিকেল সার্ভিসেস নামের ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে দেখা যায়, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট মো. মুজিবুর রহমান ও ডা. জাকির হোসেন খন্দকার এর স্বাক্ষরে ২৫ জুলাই’র তারিখে রোগীদের প্যাথালজি রিপোর্ট দিয়েছে। অথচ দু’জনের কেউ এ দিন ক্লিনিকে আসেনি। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘যাদের স্বাক্ষরে প্যাথালজি রিপোর্ট তৈরি করে হয়েছে তাদের সাথে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা মুন মেডিকেল সার্ভিসেস এর সাথে সম্পৃক্ত নন জানিয়ে প্যাথালজি রিপোর্টে স্বাক্ষর করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তাছাড়াও দেখা যায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মেয়াদ উত্তীর্ণ রিঅ্যাজেন্ট ব্যবহার করে মনগড়া রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। বাস্তবে এখানে সনদধারী কোন টেকনোলজিস্ট নেই। এমনকি হচ্ছে না কোন পরীক্ষাও। ২০১৭ সালের শেষ হয়েছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্সের মেয়াদ। নবায়নের জন্য করা হয়নি কোন আবেদনও। এসব বিষয়ে মালিক পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা কোন সদোত্তর দিতে পারেনি। বরং তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান মেডিকেল প্র্যাকটিস এবং বেসরকারি ক্লিনিক ও র্যাবরেটরিজ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ ১৯৮২-এর ১৩ (২) ধারায় মালিকসহ চারজনকে পৃথক মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করে দেন। অভিযানে প্রসিকিউশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বরিশালের সিভিল সার্জন অফিসের ডা. মুন্সী মুনিবুল হক এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িথ্ব পালন করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (দক্ষিণ) এর উপ পুলিশ কমিশনার মনজুর রহমানের নেতৃত্বাধীন টিম।