জাতীয়
রেলপথে পাচার হচ্ছে স্বর্ণের বারসহ মাদক
রিপোর্ট দেশ জনপদ :: রেলপথে চোরাচালন নতুন নয়। রেলে উন্মুক্ত স্টেশন, যত্রতত্র ট্রেন দাঁড় করানো এবং চেকিং পদ্ধতি খুবই দুর্বল। অন্যদিকে চোরাকারবারিদের সঙ্গে কতিপয় রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিরোধকারী সংস্থার সদস্যরাও জড়িত। বিভিন্ন সময় রেল কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রতিরোধকারী সংস্থার সদস্যরা সম্পৃক্ত থাকায় আইনের আওতায় এসেছে। অবৈধ মালামাল, অস্ত্র, গোলাবারুদ, স্বর্ণের বার মাদকদ্রব্যসহ বহনকারী আটক হয়েছে। ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে প্রকৃত অপরাধী ও মাদক ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি রেলওয়েতে স্বর্ণের বারসহ আসামি ও মাদকদ্রব্য আটকের ঘটনা ঘটছে। বুধবার কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় ৯ কেজি স্বর্ণবারসহ ২ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্টেশন এবং ট্রেন থেকেও মাদকদ্রব্যসহ চোরাকারবারিরা আটক হচ্ছে। তবে রেলওয়ে গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন কৌশলে রেলপথকে বেছে নিচ্ছে অপরাধীরা। যে পরিমাণ অবৈধ মালামাল এবং আসামি আটক করা হচ্ছে, তা খুবই সামান্য। রেলওয়ে পুলিশ ও রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রেলওয়ে পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলে মোট ১৭ জোড়া অর্থাৎ ৩৪টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রতিটি ট্রেনেরই ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ একটি বগিতে ৬০টি আসন সংখ্যা থাকলে সেখানে ৩০ জন যাত্রী ভ্রমণ করছেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রীরা যেমন চলাচল করছে, রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা ঠিক তেমনিই। এ পদ্ধতিকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে অপরাধীরা। বুধবার দুপুরে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আকাশ ঘোষ নামে এক যাত্রীর দেহ তল্লাশি করে ৪ কেজি ৪১৫ গ্রাম ওজনের ৭টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। একই সময়ে রবিউল নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে ২০০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করা হয়। অন্যদিকে বুধবার রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে কনক চন্দ্র বণিক নামের অপর এক স্বর্ণ চোরাচালানকারীকে ৪ কেজি ৪০০ গ্রাম স্বর্ণসহ আটক করা হয়। এ বিষয়ে রেলওয়ে পুলিশের ডেপুটি চিফ মোর্শেদ আলম জানান, বুধবার স্বর্ণ চোরাচালানের ২টি বড় চালান আটকসহ আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। রেলওয়ে পুলিশ সতর্কাবস্থায় থেকে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিতকরণে কাজ করে যাচ্ছে। অপরাধীদের শনাক্ত করতে সাধারণ যাত্রীদের সহায়তা কামনা করেছেন এ পুলিশ কর্মকর্তা। সূত্র জানায়, স্টেশনগুলোতে লাগেজ স্ক্যানারসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই। এ পথে কেবল যাত্রীদের দেহ তল্লাশি করে চোরাচালান প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। যে লোকবল রয়েছে, যাত্রীদের ১ শতাংশ তল্লাশির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। লাগেজ-বডি স্ক্যানার স্থাপন করা হলে রেলপথে চোরাচালান কমবে। ক্ষোভ জানিয়ে রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা বললেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একাধিক মন্ত্রী, রেলওয়ে মহাপরিচালক কমলাপুর-বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনসহ দেশের সব ক’টি বড় বড় স্টেশনে লাগেজ ও বডি স্ক্যানার স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ঢাকা রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিব-উল হোসেন জানান, আমরা বিভিন্ন সময় ইয়াবা, স্বর্ণের বারসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যসহ অপরাধীদের আটক করছি। তবে সব ট্রেনযাত্রীকে তল্লাশির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে লাগেজ-বডি স্ক্যানার স্থাপন হলে সব ট্রেনযাত্রী তল্লাশির আওতায় পড়বেন। ফলে অপরাধীদের শনাক্ত করা সহজ হবে। আমরা তৎপর রয়েছি, যখনই সংবাদ পাচ্ছি দ্রুততার সঙ্গে অভিযান পরিচালনা করছি।