বরিশাল সদর
বরিশালে ১০ কোটি টাকার নকল ওষুধ জব্দ: দু’জনের দণ্ড, কারখানা সিলগালা
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীতে ১০ কোটি টাকার নকল ওষুধ ও ভারতীয় প্রসাধনী জব্দ করেছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত ও ঔষধ প্রশাসন। আজ ১৫ জুন সোমবার সকালে বরিশাল মহানগরীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন ও ঔষধ প্রশাসন এর যৌথ অভিযানে দেশের নামি-দামি কোম্পানির নকল ঔষধ ও ঔষধ তৈরির মেশিনসহ বিভিন্ন সামগ্রী জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় অবৈধভাবে বিভিন্ন কোম্পানীর নাম ব্যবহার করে নকল ওষুধ ও প্রসাধনী তৈরি এবং বাজারজাতের অপরাধে আটককৃত দু’জনকে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড সাথে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি কারখানাটি সিলগালা করে দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। সূত্রমতে, বরিশাল নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ সাগরদী দরগাবাড়ির এলাকার ডাক্তার বাড়ি সংলগ্ন হদুয়া মঞ্জিল-২ মাওঃ সাদেক আহমদ এর দোতলা বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্রায় ২ বছর ধরে নকল ঔষধ এর কারখানা চালিয়ে আসছে তারা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান ও বরিশাল জেলার ড্রাগ সুপার অদিতি স্বর্না । নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমরা খবর পাই একটি চক্র নগরীর নদী বন্দর থেকে নকল কোম্পানির লোগোযুক্ত কাগজের প্যাকেট (কার্টুন) সংগ্রহ করছে। এসময় বরিশাল লঞ্চঘাট থেকে মো. মাসুম বিল্লাহ ও নূরে আলম নামের দুই ব্যক্তিকে ওই নকল কার্টুনসহ আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী ওই বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ‘টিনশেডের ওই ঘরটি তালাবদ্ধ ছিলো। তালা ভেঙে ঘরটিতে প্রবেশ করতে হয়েছে। পরে তল্লাশী চালিয়ে ঘর থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন কোম্পানির নকল ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। যার মধ্যে কিছু প্রসাধনীও রয়েছে। সেই সাথে নকল ওষুধ উৎপাদন, প্যাকেজিং ও বাজারজাতের বিভিন্ন সামগ্রী জব্দ করা হয়। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে যতটুকু তথ্য জানা গেছে তাতে তারা এসব কোম্পানীর পণ্য এখানে বসেই তৈরি করতো এবং পরবর্তীতে তা পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে আসছিল। যা আইনত দণ্ডনিয় অপরাধ। তিনি আরো বলেন, ‘ঘটনার সাথে জড়িত ও আটক হওয়া দু’জনের বিরুদ্ধে ড্রাগ অ্যাক্ট ১৯৪০ এর ১৮ ধারায় অপরাধ আমলে নিয়ে নকল ঔষধ উৎপাদন ও তা বিক্রির জন্য একই আইনের ২৭ ধারায় তাদের প্রত্যেককে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং আড়াই লাখ টাকা করে মোট ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি, যে বাড়িতে ঔষধ উৎপাদিত হতো সেটি সিলগালা করা হয় এবং নকল ঔষধ, উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট সামগ্রী জব্দ করা হয়। পরে জব্দকৃত মালামাল আগুনে পুড়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। এসময় বাড়ির মালিকের সাথে যোগাযোগ করে আসতে বললেও তিনি আসেননি। এদিকে অভিযানের ব্যাপারে ড্রাগ সুপার অদিতি স্বর্না বলেন, ‘দেশীয় এসিআই, কেমিস্ট, জেসন, গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডসহ বিভিন্ন কোম্পানির নাম ব্যবহার করে প্রস্তুতকৃত নকল ওষুধসহ বিভিন্ন সামগ্রী এই অবৈধ কারখানায় খুঁজে পাওয়া গেছে। পাশাপাশি ভারতীয় গোদরেজ, গুরুদেব, ডাবর আমলা নামক প্রসাধনীও পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে যতটুকু তথ্য জানা গেছে তাতে তারা এসব কোম্পানীর পণ্য এখানে বসেই তৈরি করতো এবং পরবর্তীতে তা পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে আসছিল। যা আইনত দণ্ডনিয় অপরাধ। এ ভেজাল কাজের সাথে জড়িত অন্যদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম।