পটুয়াখালী
মায়ের জানাজায় অংশ নিতে ২১ বছর পর চিরচেনা বাড়িতে সেলিম কাজী
হত্যা মামলায় ২৫ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সেলিম কাজী (৭৪)। দীর্ঘ ২১ বছর কারাভোগের পর বুধবার (৩ ডিসেম্বর) তার জীবনে এলো ভিন্ন এক সকাল। চারপাশে মুক্ত হাওয়া, পরিচিত মানুষের মুখ, আর বহুদিনের নিস্তব্ধ বাড়ির আঙিনা। সব কিছুই তার সামনে জীবন্ত হয়ে দাঁড়ালো। তবে বাড়ির রূপ বদলে গেছে। সেই বাড়িতে সবাই আছে, শুধু তার মা আর নেই।
৭৪ বছর বয়সি ওই বৃদ্ধ কয়েদির সাময়িক এই মুক্তি শুধুই মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান সেলিমের মা রেনু বেগম। তার জানাজায় উপস্থিত হতে আদালত তাকে কয়েক ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তির অনুমতি দেন। পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের একটি টিম কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে সকালে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। স্বজনরাও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তাকে এত বছর পর আবার কাছে পেয়ে।
বুধবার দুপুর ২টায় টাউন বহালগাছিয়ার জিয়া সড়কের স্থানীয় মসজিদের সামনে অনুষ্ঠিত হয় রেনু বেগমের জানাজা। সেখানে স্বজন ও প্রতিবেশীদের উপস্থিতিতে তৈরি হয় এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ। জানাজা শেষে বিকেল ৩টার দিকে পুলিশ পুনরায় তাকে পটুয়াখালী জেলা কারাগারে নিয়ে যায়।
জেলা কারাগার সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি একটি সিআর মামলায় বরিশালের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল সেলিম কাজীর বিরুদ্ধে ২৫ বছরের সাজা ঘোষণা করেন। কারাবন্দি অবস্থায় শুরুতে তিনি যশোর কারাগারে ছিলেন, পরে ২০০৯ সাল থেকে পটুয়াখালী জেলা কারাগারে আছেন।
জেলা কারাগারের জেলার মো. আব্দুর রব মিয়া বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আবু ইউসুফ জানান, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দি। আদালতের চিঠি পাওয়ার পর পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই তাকে জানাজায় পাঠানো হয়েছিল। আবার তাকে পুনরায় জেল হাজতে নিয়ে আসা হয়েছে।


