বরিশাল
বিএম কলেজে বোটানিক্যাল গার্ডেন নিয় বিতর্ক, স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছে কলেজ প্রশাসন
বরিশালের ঐতিহ্যবাহী সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের সাত দশকের সবুজ ঐতিহ্য বোটানিক্যাল গার্ডেননিয়ে শুরু হওয়া বিতর্কের পর অবশেষে নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শেখ মো. তাজুল ইসলাম।
বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির গাছপালার সমাহারে গড়া এই বাগানের ওপর স্থাপনা তৈরির চেষ্টা শুরু হতেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এই বিষয়ে গত রবিবার ( ২৩ শে নভেম্বর) কলেজ অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।
সংগঠনের অভিযোগ—৭৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই বাগানকে ধ্বংস করে নীরবে স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছিল। তারা দাবি করেন, ” বাগানটি শুধু শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও শিক্ষাকর্মে নয়, বরং পুরো অঞ্চলের পরিবেশ-ইতিহাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত। প্রকৃতিবিদ দ্বিজেন শর্মার হাতে লাগানো দুর্লভ নাগালিঙ্গমসহ বহু গাছ এই বাগানের বিশেষত্ব বহন করে।
একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ- এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কোনো ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেনি কর্তৃপক্ষ। এর আগেও বাগানের একাংশে টেনিস কোর্ট নির্মাণের চেষ্টা হয়েছিল; তৎকালীন প্রগতিশীল ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের আন্দোলনে তা বন্ধ হয়। এবার ‘জুলাই আন্দোলন’-এর পর আবারও সবুজ দখলে মেতে উঠেছে কতিপয় ব্যক্তিবর্গ। কলেজ প্রশাসন তা বন্ধ করেছে। তার জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু ভবিষ্যৎতে এমন কাজ করা হলে শিক্ষার্থীরা কঠোর হাতে প্রতিহত করবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন ( বাপা) এর বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী মোঃ রফিকুল আলম বলেন, এই কলেজটি যেমন ঐতিহ্যবাহী, একই সাথে এই বাগানটিও ঐতিহ্যবাহী। বরিশাল অঞ্চলের বিলুপ্ত প্রায় গাছগুলো এখানে সংরক্ষিত রয়েছে। তাই এখানে কোন অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না।
কলেজ প্রশাসনকে অনুরোধ করে তিনি আরো বলেন, যে সকল গাছগুলো বর্তমানে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। সেগুলো এখানে রোপণ করে সংরক্ষণ করা হোক। এতে প্রকৃতি ও নিসর্গ রক্ষা পাবে।’
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শেখ মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বোটানিক্যাল গার্ডেনের অভ্যন্তরে স্থাপনা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে। আমরা আপাতত নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছি। বিএম কলেজে প্রকৃতি ও প্রাণ বৈচিত্র রক্ষা করতে কলেজ প্রশাসন অঙ্গীকারবদ্ধ।’
বরিশাল সচেতন মহলের সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ প্রশাসন কাজ বন্ধ রেখেছে যার ফলে আপাতত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে বিএম কলেজের সবুজের জগৎ বাগান—বোটানিক্যাল গার্ডেন। তবে ভবিষ্যতে এটি রক্ষায় কী সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন, এখন তাকিয়ে আছে কলেজের শিক্ষার্থীসহ সচেতন মহল।



