রাজনীতি
আওয়ামী লীগ থেকে ফিরে বিএনপির সভাপতি হলেন জাকির!
ক্ষমতার আমলে আওয়ামী ভিড়েছিলেন আমিনুল ইসলাম জাকির মোল্লা। এখন বিএনপির সুসময়ে তিনি আওয়ামী লীগ ছেড়ে ফের পুরানো দলে ফিরেছেন। দলে ভিড়েইে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির পদে পুরস্কৃত হন। এ নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিযেছে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে। তারা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে নানা নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। ঘটনাটি বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার উদয়কাঠী ইউনিয়নে।
জানা গেছে, উপজেলার বাইশারী সৈয়দ বজলূল হক কলেজের সহকারী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম জাকির উদয়কাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ছিলেন। ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৩ ডিসেম্বর বিএনপি তাকে বহিস্কার করে। তখন ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হন সিনিয়র সহ-সভপতি আলমগীর হোসেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে জাকির নৌকা প্রতীকের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তার ভাই বাদল মোল্লা বিভিন্ন সময় জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে উদয়কাঠি ইউনিয়নের করমজা কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন।
বিএনপির ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, গত বছর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জাকির ফের বিএনপিতে ফিরতে নানা কৌশল করে। গত জুলাইতে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে তাকে উপজেলা বিএনপির সদস্য পদ দেওয়া হয়। গত ১৯ নভেম্বর পত্রের মাধ্যমে আমিনুল ইসলাম জাকিরকে সভাপতি করে উপজেলার উদয়কাঠী ইউনিয়ন বিএনপির ১০১ সদস্যের কমিটি দেয়া হয়েছে। উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মঞ্জুর খান ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ মৃধা ওই পত্রে স্বাক্ষর করেন। উদয়কাঠী ইউনিয়নের বাসিন্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহ আলম মিঞা উপস্থিত থাকার পরেও তার স্বাক্ষর না নিয়ে সিনিয়র সহ-সভাপতি মঞ্জুর খানের স্বাক্ষর নেওয়া নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
উদয়কাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, দলের চরম দুঃসময়ে জাকির আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে। তাকে ফের দলে এনে পদ দিয়ে পুরস্কৃত করা হলো। আর আমরা যারা দল আকরে থেকে হামলা-মামলার শিকার হয়েছি তারা হলাম তিরস্কৃত। ঘোষিত কমিটি গঠনতন্ত্র মেনে হয়নি। কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানান আলমগীর।
এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ মৃধা বলেন, জাকির মোল্লাকে আওয়ামী লীগে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছিলো। মুঠোফোনে সাড়া না দেওয়ায় এ প্রসঙ্গে উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহ আলম মিঞার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জাকির মোল্লা বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক আমার কলেজ গভর্নিংবডির সভাপতি ছিলেন। কলেজ অধ্যক্ষ ও আামিসহ আরও কয়েকজন শিক্ষককে আওয়ামী লীগে যোগ দিতে বাধ্য করেছে।
অভিযোগ রযেছে, নবগঠিত ইউনিয়ন বিএনপির কমিটির পদ পাওয়াদের মধ্যে জামায়াতে যোগদান করা দুজন নেতাও রয়েছেন। এদিকে পূর্বের ইউনিয়ন কমিটি বিলুপ্ত না করে এবং কোন কাউন্সিল ছাড়াই গঠিত পকেট কমিটিতে আওয়ামী লীগে যোগদান করে বহিস্কৃত হওয়া নেতাকে পুনরায় শীর্ষ পদ দিয়ে পুরস্কৃত করা,জামায়াতে যোগদান করাদের অন্তর্ভূক্তি এবং দলের দুঃসময়ের নির্যাতিত ত্যাগী ও পরীক্ষিত নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মীদের কমিটিতে অবমূল্যায়ন করায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়ে সাধারণ নেতা-কর্মী সমর্থকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা ভাবে তারা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আমিনুল ইসলাম জাকির মোল্লার ফুল দেওয়া ও আওয়ামী লীগে যোগদানের ছবি এবং এ সংক্রান্ত নিউজ পোস্ট করে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। তারা অগঠনতান্ত্রিকভাবে গঠিত এ কমিটি অনতিবিলম্বে বাতিল করে কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের দুঃসময়ের ত্যাগী, নির্যাতিত ও পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের জোর দাবি জানিয়েছেন।’


