আন্তর্জাতিক
গাজা শহরে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল, চলছে বোমাবর্ষণ
ইসরায়েল গাজা শহরে স্থল অভিযান শুরু করেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, গাজা জ্বলছে। সৈন্যরা জিম্মিদের মুক্তি ও হামাসকে পরাজিত করার লক্ষে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানানা তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত দুই বছরের মধ্যে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান হামলা, যেখানে সারা রাতজুড়ে বোমাবর্ষণ, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাশাপাশি ট্যাঙ্ক অগ্রসর হচ্ছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গাজা শহরের গভীরে প্রবেশ করছে স্থলবাহিনী এবং আগামী দিনগুলোতে সেনা সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। সেনাবাহিনী ধারণা করছে, শহরে এখনো প্রায় ৩ হাজার হামাস যোদ্ধা অবস্থান করছে।
অভিযানের সময় ইসরায়েল ইউরোপীয় নেতাদের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা ও নিজ দেশের কিছু সামরিক কর্মকর্তার সতর্কতা উপেক্ষা করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিও অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে, যার পেছনে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুসহ শীর্ষ নেতাদের উস্কানি রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অভিযানের প্রাথমিক ঘণ্টাগুলোতেই অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই গাজা শহরের বাসিন্দা।
রয়টার্স-এর ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, মধ্যরাতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া দুটি বহুতল আবাসিক ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে মানুষজন আটকে পড়া স্বজনদের উদ্ধারে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। একটি শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে তাড়াহুড়ো করে সবুজ কম্বলে মোড়ানো হয়, আর এক নারীর কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ।
আবু মোহাম্মদ হামেদ নামের এক বাসিন্দা বলেন, আমার অনেক আত্মীয় নিহত বা আহত হয়েছে। এক চাচাতো বোন এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে। আমরা চেষ্টা করছি তাকে বের করার।
এদিকে ইসরায়েল আবারও নাগরিকদের দক্ষিণে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ফলে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাড়ি, রিকশা, গাধার গাড়ি অথবা পায়ে হেঁটে দক্ষিণ ও পশ্চিমের দিকে যাত্রা শুরু করেছেন।
৭০ বছর বয়সী আবু তামের বক্তব্য, তারা আমাদের আবাসিক ভবন, শহরের স্তম্ভ, মসজিদ, স্কুল ও সড়ক ধ্বংস করছে। তারা আমাদের স্মৃতিগুলো মুছে ফেলছে।