বরিশাল
টানা ৭ ঘণ্টা অবরোধের পর বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক ছাড়ল শিক্ষার্থীরা
শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবিতে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করার সাত ঘণ্টা পর তা স্থগিত করল আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইউনুস আলী সিদ্দিকীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আগামীকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়।
যে কারণে রাত ৮টার পর থেকে শত শত যানবাহন ছুটতে থাকে গন্তব্যে। এর আগে দূর থেকে আসা শত শত মানুষ গাড়ি থেকে নেমে পথের পাশে বসে ছিলেন। শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধের পাশাপাশি বরিশাল শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করে।
মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে কয়েক শ শিক্ষার্থী নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসংলগ্ন বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের সামনে অবরোধ করে। যা অব্যাহত ছিল রাত ৮টা পর্যন্ত। এর ফলে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে সড়কপথে যাতায়াতে নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা অতিক্রম করতে পারেনি যানবাহন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষা বোর্ডের দুই পাশে যানবাহনের কয়েক কিলোমিটার লাইন পড়েছে। শত শত বাসযাত্রী বাস থেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা হয়েছেন। থ্রি-হুইলারগুলোয় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ভাড়া হাঁকাচ্ছে। ঢাকা থেকে বাসে পটুয়াখালীর দশমিনায় যাচ্ছিলেন আ. রাজ্জাক ও শফিকুল ইসলাম। শিক্ষা বোর্ডের সামনে অবরোধে তাঁদের গাড়ি সেখানে আটকা পড়ে। এ নিয়ে তাঁরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবরোধ শুরুর পর সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এতে শিক্ষার্থীরা আরও উত্তেজিত হলে সেনাবাহিনী চলে যায়। পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা নীরব ভূমিকা পালন করে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক সাব্বির হোসেনের নেতৃত্বে সংগঠনের প্রতিনিধিরা শিক্ষা বোর্ডের সামনে যান। তাঁরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগান দিলে সঙ্গীদেরসহ সাব্বির ওই এলাকা ত্যাগ করেন।
আন্দোলনকারী সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের শিক্ষার্থী তানভির হোসেনসহ অন্যরা জানান, শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ অব্যাহত থাকবে। পরে অবশ্য অবরোধ স্থগিত রাখা হয়।
শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ ছাড়াও শিক্ষার্থীদের আরও পাঁচ দফা হলো—বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের সুনির্দিষ্ট তালিকা প্রকাশ, আহত ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা, শিক্ষকদের গায়ে হাত তোলা সেনাসদস্যদের ক্ষমা চাওয়া, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং ঝুঁকিপূর্ণ পুরোনো বিমান বাতিল ও নিরাপদ প্রশিক্ষণ বিমান চালু করা।
রাত পৌনে ৮টার দিকে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইউনুস আলী সিদ্দিকী বোর্ডের সামনে এসে আশস্ত করেন যে তাদের দাবিগুলো মাউশি, আন্তবোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অবহিত করবেন। তবে উপদেষ্টার পদত্যাগের বিষয়ে তাঁর কিছু করার নেই। এমন আশ্বাসে ছাত্ররা সড়ক ছেড়ে দেয়।’