সারাদেশ
কেউ এসে একবারও ওই উন্মাদ খুনিদের থামাইল না: নিহত সোহাগের স্ত্রী
একপাশে বাঁধানো মায়ের কবর। মায়ের বাঁ পাশে সদ্য সমাহিত করা হয়েছে ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে নৃশংসভাবে খুন হওয়া লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে। কবরের মাটি এখনো শুকায়নি। স্বামীর শোকে সেই কাদামাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন স্ত্রী লাকী আক্তার। বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন, আবার প্রলাপ বকছেন। এ যেন হৃদয়স্পর্শী শোকের মাতম। স্বামীর কবরকে আঁকড়ে ধরে কান্নায় ভেঙে যাওয়া কণ্ঠে লাকী আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীরে মারতাছে, আর হাজার হাজার লোক চেয়ে চেয়ে দেখল। কেউ এসে একবারও ওই উন্মাদ খুনিদের থামাইল না। সে একটা সুন্দর পাঞ্জাবি পইরা বের হইছিল। কী সুন্দর দেখাচ্ছিল তাকে। ওই পাঞ্জাবিটাও ওরা খুলে নিয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও ওরা আমার স্বামীর বুকের ওপর ওঠে নৃত্য করেছে। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচব? দুইটা অবুঝ শিশু, ওদের কীভাবে মানুষ করব।’
এমন সময় ছুটতে ছুটতে সোহাগের কবরের কাছে চলে আসেন তাঁর বড় বোন ফাতেমা বেগম। একমাত্র ভাইকে হারিয়ে তিনিও পাগলপ্রায়। তিনিও ভাই হারানোর শোকে বিহ্বল হয়ে বারবার কবরের কাদামাটিতে মূর্ছা খেয়ে প্রলাপ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দুই বোনের একটা ছোট ভাই। কী সুন্দর নূরআনি চেহারা। সবার ভাই থাকবে, আর আমার ভাইকে আর দেখমু না। আল্লাহ আমার ভাইরে যারা মারছে, হের বিচার করো।’
গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় বরগুনার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকার বাদলগাছিয়া গ্রামে মামার বাড়িতে মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হন সোহাগকে।
এর আগে ৯ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় ৩ নম্বর গেটে শত শত মানুষের সামনে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে সোহাগকে।
এই হত্যার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে। প্রতিবাদ হয়েছে নিজ জেলা বরগুনায়ও।