বরিশাল
বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষকে ফাঁসাতে কুটকৌশল
প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে কুচক্রি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত-কলেজ অধ্যক্ষ
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীর একটি সরকারি কলেজের সুনাম নষ্ট করতে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ওই কলেজের অধ্যক্ষকে ফাঁসাতে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগও তুলে ধরা হয়েছে প্রকাশিত নিউজে।
বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আবু মামুন এমন অভিযোগ তুলে বরিশাল প্রেসক্লাব ও রিপোর্টার্স ইউনিট বরাবর অভিযোগ পত্র দাখিল করেছেন। তিনি বলেন, কলেজের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একটি কুচক্রি মহল দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন যাবৎ সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা ও ভালো ফলাফলের পাশাপাশি শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি চর্চাসহ সকল ক্ষেত্রে কলেজটি বিশেষভাবে সুনাম অর্জন করেছে।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এর আগেও সাবেক অধ্যক্ষদের নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশিত করেছে। প্রকাশিত সংবাদে বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আবু মামুন জানান, আমার বিরুদ্ধে কয়েকটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে যে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে, তা খুবই দুঃখজনক। এমন ভিত্তিহীন নিউজের প্রতিবাদ জানিয়ে স্বাক্ষর করেছেন ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪০ জন শিক্ষক ও ১৮ জন দাপ্তরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারি। অভিযোগের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আবু মামুনের বক্তব্য তুলে ধরা হলো।
প্রথম অভিযোগঃ পছন্দের কয়েকজন শিক্ষকদের নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তোলাঃ এ বিষয়ে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আবু মামুন জানান, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পছন্দের শিক্ষক নিয়ে কাজ করার কোন সুযোগ নেই। সকল সিদ্ধান্ত সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কাউন্সিল নীতি নির্ধারণি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা প্রত্যেক বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে গঠিত। এছাড়া সকল শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সমান সুবিধা (আর্থিক সুবিধা প্রাপ্ত বিভিন্ন কমিটি) ভোগ করে কিনা তা দেখভাল করার জন্য একটি নির্বাচিত (৭ জন সদস্য বিশিষ্ট) শিক্ষক পরিষদ রয়েছে। ওই পরিষদের সম্পাদক একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
দ্বিতীয় অভিযোগঃ গাইড বই চলে টাকার বিনিময়ঃ এ বিষয়ে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) লিখিত বক্তব্যে জানান, অত্র প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পাঠ্যক্রম অনুমোদিত সকল বইয়ের তালিকা সিলেবাসে উল্লেখ করে দেয়া আছে। বাংলা এবং ইংরেজি গ্রামারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ছাত্র ছাত্রিদের একটি করে বই প্রস্তাব করেন সেখানে পাঞ্জেরি গাইড বলে কোন শব্দ উল্লেখ করা নেই এবং কোন শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারি পাঞ্জেরি গাইড নিয়ে কোন প্রচারণা চালায়নি।
তৃতীয় অভিযোগঃ স্টাফ কাউন্সিলের তহবিল থেকে ভ্রমণ বিলাসঃ এ বিষয়ে তিনি জানান, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি সকল শিক্ষকদের অনুমোদনক্রমে শিক্ষক পরিষদ গঠন হয়। শিক্ষকদের প্রাপ্য সম্মানীর ২% টাকা শিক্ষক পরিষদের ফান্ডে জমা হয়। শিক্ষক পরিষদের আবেদনের ভিত্তিতে একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের কল্যাণে খরচ করা যায়। এ উপলক্ষ্যে সকল শিক্ষককে অবহিত করে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ ক্ষেত্রে কিছু শিক্ষক তাদের পারিবারিক কিছু অসুবিধার কারণে যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে এবং যেতে পারবেনা বলে জানায়। পরবর্তিকালে এই অর্থ বছরে কিছু শিক্ষকদের পরিবারসহ মোট ৪০ জন ট্যুরে যায় এবং একাডেমিক কাউন্সিলের ৬৩ তম সভায় ৪৬০০০ টাকা ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ২/৩ জন শিক্ষক যেতে না পারায় সিদ্ধান্তের আলোকে ৯০৭১ টাকা উক্ত ফান্ডে রিফান্ড করা হয়। সুতরাং ৩৬৯২৯ টাকা শিক্ষক পরিষদের ফান্ড থেকে ব্যয় করা হয়।
চতুর্থ অভিযোগঃ শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকা আত্মসাৎঃ এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি আরও জানান, দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৩ ডিসেম্বর বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয় কিন্তু অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আর্থিক ক্ষমতা পায় ১৫ ডিসেম্বর। ফলে বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকা থেকে বিরিয়ানী খাওয়ানো সম্ভব নয়। তাছাড়া বর্তমান অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) বছরে দুইবার বিরিয়ানী খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুতরাং শিক্ষার্থীদেরকে বিরিয়ানী না খাওয়াইয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়টি সম্পুর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
পঞ্চম অভিযোগঃ গোপনে তিন জনকে নিয়োগঃ এ বিষয়ে আবু মামুন তার লিখিত বক্তব্যে জানান, একজন স্থায়ী কর্মচারী ও দুই জন আমন্ত্রিত কর্মচারী চলে যাওয়ায় গত বছর ২৩ নভেম্বর একাডেমিক কাউন্সিল সভায় দৈনিক মজুরী ভিত্তিতে ৩ জন কর্মচারী নেওয়ার বিষয় আলোচনা হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর দৈনিক মজুরী ভিত্তিতে ৩ জন কর্মচারী নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। ষষ্ঠ অভিযোগঃ অর্থ আত্মসাতে নিম্নমানের ক্রীড়া সামগ্রী প্রদানঃ অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জানান, একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৩ নভেম্বর বার্ষিক ক্রীড়া কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্য ছিলেন জনাব এস. এম. মাঈনউদ্দিন, জনাব শিখা রানী সাহা, জনাব পলাশ কুমার দেবনাথ, জনাব রনজিৎ কুমার সাহা এবং জনাব মোঃ শাহজাহান। ক্রীড়া সামগ্রী ও পুরস্কার ক্রয়ের সম্পুর্ণ দায়িত্ব ক্রীড়া কমিটির, অধ্যক্ষের নয়। এ বছর পূর্বের তুলনায় আরও ভালো মানের ক্রীড়া সামগ্রী দেওয়ার জন্য অধ্যক্ষ পরামর্শ দিয়েছে এবং কমিটি সে অনুযায়ী কাজ করেছে। ক্রীড়ার পুরস্কার নিয়ে কারও কোন অভিযোগ নেই বরং পূর্বের চেয়ে ভালো মানের পুরস্কার পেয়ে সবাই প্রশংসা করেছে। সপ্তম অভিযোগঃ কাজ সম্পুর্ণ না হলেও অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাতঃ এমন অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) তার বক্তব্যে জানান, অত্র কলেজে প্রায় ১৮ লাখ টাকার ফ্লোর মোজাইকের সরকারি কাজ চলমান আছে।
ইঞ্জিঃ জনাব মোঃ মামুন হাওলাদারের (মোবাইলঃ ০১৯১৪-৫৬১৬৮১) তত্ত্বাবধানে কাজটি পরিচালিত হচ্ছে এবং কাজ দেখভাল করার জন্য অত্র প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরিণ কমিটি আছে। কাজ শেষে কমিটি ক্লিয়ারেঞ্জ না দেওয়া পর্যন্ত কেউ অর্থ উত্তোলন করতে পারবে না। কাজেই অভিযোগটি সম্পুর্ণ মিথ্যে বা