পাথরঘাটা
বরগুনায় ভোল মাছটি বিক্রি হলো ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায়
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরগুনার পাথরঘাটায় ৩০ কেজি ১০০ গ্রাম ওজনের একটি সামুদ্রিক ভোল মাছ সাড়ে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। পাথরঘাটা উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবিরের এফবি সাইফ-২ নামের একটি মাছ ধরা ট্রলারের জেলেরা বঙ্গোপসাগরে ভোল মাছটি ধরে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকালে পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে (বিএফডিসি) বিক্রির উদ্দেশ্যে মাছটি নিয়ে আসেন জেলেরা। পরে আলম মিয়ার মৎস্য আড়তের মাধ্যমে খোলা ডাকে স্থানীয় মৎস্য পাইকার মো. হানিফ মিয়া মাছটি কিনে নেন।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এফবি সাইফ-২ নামের মাছ ধরা ওই ট্রলারটিতে ১৫ জন জেলে স্টাফ মিলে মাছ শিকার করতে সাগরে যায়। পরে মাছ শিকার করতে সাগরের বিভিন্ন এলাকায় জাল ফেলেন তারা। এরপর গত রোববার বঙ্গোপসাগরের প্রায় ১৮০ নটিক্যাল মাইল দূরে জাল ফেললে ৩০ কেজি ওজনের ভোল মাছটি ধরা পড়ে।
পরে আজ মঙ্গলবার সকালে জেলেরা ট্রলার নিয়ে পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে এলে আলম মিয়ার মৎস্য আড়তের মাধ্যমে স্থানীয় এক পাইকার মো. হানিফ মিয়া সাড়ে ৩ লাখ টাকায় মাছটি কিনে নেয়। তবে প্রথমে মাছটিকে পুরুষ ভোল ভেবে মণ প্রতি ১২ লাখ টাকা দাম নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তীতে মাছটি মহিলা ভোল হওয়ায় দাম কমিয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়।
এফবি সাইফ-২ ট্রলারের মাঝি জামাল বলেন, আমরা সাগরে মাছ শিকার করতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জাল ফেলে তেমন মাছ পাচ্ছিলাম না। পরে হঠাৎ আমাদের জালে ৩০ কেজি ওজনের বিশাল একটি ভোল মাছ ধরা পড়ে। এতো বড় মাছ সাগরে সচারাচার আমরা পাই না। এ কারণে বিশাল এ মাছটি পেয়ে আমরা সবাই আনন্দিত।
ডাকের মাধ্যমে ভোল মাছটি ক্রয় করে মৎস্য পাইকার মো. হানিফ মিয়া বলেন, প্রথমে মাছটিকে পুরুষ ভোল ভেবে ১২ লাখ ১০ হাজার টাকা মণ দরে কিনেছিলাম। পরে যখন দেখতে পাই মাছটি মা ভোল তখন দাম কমিয়ে পুন-নির্ধারণ করে ৩ লাখ ৫০ টাকায় কিনেছি। মাছটিকে প্রসেসিং করে চট্টগ্রামে পাঠালে ভালো দামে বিক্রি করা যাবে।
সাইফ কোম্পানির ব্যবস্থাপক মনিরুল হক মাসুম বলেন, ৩০ কেজি ১০০ গ্রাম ওজনের ওই মাছটি প্রথমে ১২ লাখ টাকা মণ ধরা হয়। তবে কোরাল ভোল প্রজাতির পুরুষ মাছ ভেবে এ দামে বিক্রি করলেও পরে মাছটির পেট থেকে বালিশ সংরক্ষণ করতে গিয়ে পেটে ডিম দেখে বোঝা যায় ভোলটি মা মাছ। পরে দাম কমিয়ে মাছটিকে সাড়ে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসিবুল ইসলাম বলেন, ভোল মাছ সাধারণত বিদেশে ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। সাগরে বিভিন্ন সময়ে সরকারিভাবে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, জেলেরা তা মেনে চললে এবং পোনা নিধন বন্ধ রাখলে এমন বড় মাছের সংখ্যা আরও বাড়বে। মাছটি দেশের বাজারে বিরল হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে