বরিশাল
বরিশালে বিএনপিকে জিজ্ঞেস না করে গরু বিতরণ, মৎস্য কর্মকর্তাকে নাজেহাল
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় মৎস্য অধিদপ্তরের আওতায় গরু বিতরণ অনুষ্ঠানে গিয়ে হট্টগোল করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিএনপিকে জিজ্ঞেস না করে কেন গরু বিতরণ করা হচ্ছে, এ অভিযোগ তুলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুস সালেহীনকে নাজেহাল করা হয়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, বিএনপির নেতাদের জিজ্ঞেস না করে কেন গরু বিতরণ করা হলো, এ নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। ভবিষ্যতে বিএনপির নেতাদের মতামত ছাড়া কোনো কার্যক্রম করবেন না, এমন ওয়াদা দিয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নিজেকে রক্ষা করেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হতে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে অসংখ্যবার কল দেওয়া হলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি।
সূত্র জানায়, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচির আওতায় পূর্বের তালিকাভুক্ত ৮০ জন জেলেকে একটি করে গরু বিতরণ করা হয়। সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আহমেদ। তিনি ৪৮টি গরু সুবিধাভোগীদের হাতে হস্তান্তর করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
এর পরে সেখানে আসেন দেহেরগতি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ফারুক, উপজেলা কমিটির সদস্য খোকন প্যাদা, চাঁদপাশা ইউনিয়নের রুবেল সরকার, রাজগুরু এলাকার নান্টু জমাদ্দারসহ অনেকে। তাঁরা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে বিএনপির আরও অনেককে এনে পরিস্থিত উত্তপ্ত করে তোলেন। এ ঘটনার একটি ভিডিওচিত্র ফাঁস হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, উত্তেজিত হয়ে বিএনপির এক নেতা বাবুগঞ্জ মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুস সালেহীনকে বলেন, ‘গরু দেওয়ার বিষয়ে আমার কাছে জিজ্ঞেস করেনি। আমার এলাকার লোককে বারবার বঞ্চিত করতে পারি না। সে আওয়ামী লীগের লোককে গরু দেয়।’ বিএনপির অপর এক নেতা মৎস্য কর্মকর্তাকে বলেন, ‘আমরা এর আগেও শুনেছি যে জামায়াতের লোক নিয়ে আপনি জেলে কার্ড করেছেন। বিএনপির লোক গেলে বলেন চলে যান।’ এ সময় মৎস্য কর্মকর্তা তাঁদের বসতে বললে চিৎকার করে বিএনপির নেতারা বলেন, ‘আপনি আওয়ামী লীগের লোক, আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোস্তাফিজুর রহমান ফারুক প্রথমে দাবি করেন, মৎস্য কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁদের কিছু হয়নি। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী গরু বিতরণ করছিলেন তিনি। তাঁরা সেটা না করার জন্য বলেছেন। মৎস্য কর্মকর্তাকে ঘিরে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলার ভিডিও আছে বলার পর ফারুক বলেন, ‘ভিডিওতে যতটুকু দেখেছেন, ততটুকুই ঘটনা, এর বেশি কিছু হয়নি।’
জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব অহিদুল ইসলাম প্রিন্স দাবি করেন, কিছু হয়নি। আওয়ামী লীগের লোকজনদের গরু দেওয়ায় বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী প্রতিবাদ করেছেন মাত্র।
এ বিষয়ে ইউএনও ফারুক আহমেদ জানান, তিনি গরু বিতরণ কর্মসূচি শুরু করে দিয়ে মাঠপর্যায়ের আরেকটি কর্মসূচিতে অংশ নিতে চলে যান। এরপরে সাংবাদিকেরা তাঁকে জানিয়েছেন, সেখানে ঝামেলা হয়েছে। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না।