বরিশাল
বরিশাল প্রেসক্লাবের নামে রেনুপোনার গাড়ী থেকে চাঁদাবাজি
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালে রেনুপোনার গাড়ী পার করে দেয়ার নাম করে সাংবাদিক পরিচয়ে ও প্রেসক্লাবের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগে উঠেছে একদল সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে একজন নিজেকে মস্তবড় সাংবাদিক দাবি করে রেনুপোনা পাচারকারী ইব্রাহিমের কাছ থেকে প্রতি রাতে ১৫ হাজার টাকা নেন বলে অভিযোগ ইব্রাহিমের। দাবিকৃত টাকা না দিলে পথে গাড়ী আটকিয়ে নানা টালবাহানা করেন তারা।
জানা গেছে- বরিশাল সদর উপজেলার লাহারহাট ঘাট এলাকা থেকে সাতক্ষীরা এলাকার ইব্রাহিম স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় নদী থেকে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে অবৈধ রেনু পোনা আহরণ করে বরিশাল নগরী ও আশেপাশের মহাসড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন স্থানে পাচার করেন। প্রায়সই এধরনের কম বেশী রেনু পোনা আটক হলেও তৎপরতা থেমে নেই। তবে সুকৌশল একদল সাংবাদিক রাতে সড়কে দাড়িয়ে থেকে রেনু পোনার গাড়ী আটকিয়ে চাঁদাবাজি করেন। এতে বাধ্য হয়ে রেনুপোনা পাচারকারীরা তাদের দারস্থ হন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গাড়ী প্রতি ১৫ হাজার টাকায় দফারফা করেন ওই সাংবাদিকরা।
এ বিষয়ে রেনুপোনা পাচারকারী ইব্রাহিম বলেন- আমার রেনুপোনার গাড়ী পার করে দেয়ার নাম করে রিপন নামের একজন সাংবাদিক প্রেসক্লাবের নামে প্রতি ট্রিপে ১৫ হাজার টাকা নেন। তবে এই টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা প্রেসক্লাবে জমা দেন, বাকি ৫ হাজার টাকা তিনি ও তার ভাই-ব্রাদাররা নেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। এই পর্যন্ত মাত্র একবার গাড়ী পাঠিয়েছি, তবে তারা গাড়ী পার করতে সহায়তা করেন নি। এখন রেনুপোনা পাচার করা কষ্টসাধ্য হয়ে পরেছে, কারণ স্থানীয়রাও এখন গাড়ি আটকায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেনুপোনা ব্যবসায়ী বলেন, ইব্রাহিমসহ বেশ কয়েকজন বরিশাল অঞ্চলের পাচারকারীদের কাছ থেকে বাটার পোনা সংগ্রহ করে ঘের মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। সম্প্রতি বরিশাল ও পটুয়াখালী উপকূল থেকে রেনুপোনা সংগ্রহ করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। তবে বরগুনা ও পিরোজপুর থেকে নিরাপদে সড়ক পথে রেনুপোনা পৌঁছে যাচ্ছে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে।
তিনি আরও বলেন- বরিশালের স্থানীয় কতিপয় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে এই রেনু পোনা বহন করে আসছেন। টাকা না দিলে বাধে বিপত্তি। গাড়ী আটকে দেন তারা।
এ ঘটনার ডকুমেন্টসহ একাধিক কল রেকর্ডিং প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সংবাদকর্মী বলেন- বরিশালে এমন বেশ কয়েকটি চক্র তারা নামে-বেনামে অফিস খুলে গাড়ির সামনে ও পেছনে মুখোরচক প্রেস লেখা স্টিকার লাগিয়ে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করে বেড়ান। বরিশাল প্রেসক্লাবে নামে চাঁদা আনলে সেটা নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই। আর খুশি হয়েও কেউ আমাদের ১ টাকা দিলেও সেটা চাঁদাবাজি হয়ে যায়। এ সকল চাঁদাবাজদের লাগাম টেনে ধরতে হবে তবেই সাংবাদিকতার মতো মহান পেশা কলঙ্ক মুক্ত হবে।
বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী মামুন বলেন, বরিশাল প্রেসক্লাবের নামে চাঁদাবাজির বিষয়টি খুবই দু:খজনক। প্রেসক্লাবের নামে কেউ চাঁদাবাজি করে এমন তথ্য প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।