বরিশাল
বরিশালে চরের খাসজমিতে স্টেডিয়াম নির্মাণ, ৬ কোটি টাকা জলে যাওয়ার শঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের হিজলা উপজেলায় চরের খাসজমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম। চরের মধ্যে এ স্টেডিয়াম নির্মাণ করায় ক্রীড়াবিদ ও প্রেমীদের কোনো কাজে আসবে না বলে মনে করছেন ক্রীড়া সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হিজলা উপজেলার হিজলা-গৌরব্দী ইউনিয়নের একতা বাজার সংলগ্ন চরে ২০২৩ সালে শুরু হয় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ। ৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ওই স্টেডিয়ামে ৩০০ ফুট গ্যালারি ও চারতলা প্যাভিলিয়ন ভবন নির্মাণ করা হবে। এখানে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা যাবে। স্টেডিয়ামটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে নূরজাহান কনস্ট্রাকশন।
হিজলা উপজেলার বাসিন্দারা বলেন, চরের মধ্যে নদীতীরে স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হচ্ছে। স্টেডিয়ামের ১০ ফুট দূরত্বে খাল ও নদী। নদী থেকে বালু উত্তোলন করে স্টেডিয়ামের মাঠ করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ জমিতে নির্মাণ করা ওই স্টেডিয়াম ক্রীড়াপ্রেমীদের কাজে আসবে না। উপজেলা সদর থেকে নদীপথ ছাড়া যোগাযোগের উপায় নেই। নদীপথেও আধা ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। যার কারণে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা স্টেডিয়াম পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকবে।
হিজলা উপজেলা প্রশাসনের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মূলত স্টেডিয়ামটি কোনো কাজে লাগবে না। কারণ মেঘনা নদীর যে স্থানে করা হয়েছে সেখানে জনবসতি নেই। ভবিষ্যতে হবেও না। স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসসহ সরকারি দিবস পালনের কোনো কর্মসূচি আয়োজন করাও যাবে না। কারণ নদীপথে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই।
হিজলা উপজেলার ক্রীড়াবিদ দেওয়ান সালাউদ্দিন রিমন বলেন, বরিশাল-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ টাকা কামানোর জন্য তাড়াহুড়া করে চরে গিয়ে স্টেডিয়াম করেছেন। উপজেলা সদর থেকে নদী পার হয়ে ওই স্টেডিয়ামে গিয়ে কারা খেলবে?
হিজলা উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক নবু হাওলাদার বলেন, উপজেলা সদরে স্টেডিয়াম করার জন্য কেউ জমি দেয়নি। তাই একতা বাজার সংলগ্ন চরের খাসজমিতে স্টেডিয়াম করা হচ্ছে। তা না হলে স্টেডিয়ামের জন্য বরাদ্দ অর্থ চলে যেত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে কয়েকবার গিয়ে নির্মাণকাজ দেখে এসেছি। বর্তমানে স্টেডিয়াম নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে।
এ বিষয়ে হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, যখন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তখন জমি অধিগ্রহণের সুযোগ ছিল না। তাই খাসজমিতে করা হয়েছে। হিজলা সদরের আশপাশে কোনো খাসজমি নেই। তাই মেঘনা নদীর তীরে করতে হয়েছে।