পিরোজপুর
ছাগল আটকে ভূরিভোজ করা সেই কর্মকর্তার পদত্যাগের খবরে পিরোজপুরে মিষ্টি বিতরণ
ঘাস খেতে আসা অন্যের ছাগল আটকে জবাই করে ভূরিভোজ করা বহুল আলোচিত পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক কর্মকর্তা ডা. ফজলে বারী পদত্যাগ করেছেন।
নারী কেলেঙ্কারিসহ অর্থ লুটপাটের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগের দায় স্বীকার করলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) পদত্যাগ করেন তিনি।
মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত অবস্থায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি।
আর এই খবরে পিরোজপুরে নাজিরপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।
বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত বিভিন্ন চিকিৎসক, কর্মচারী ও ভুক্তভোগী স্থানীয়রা এ মিষ্টি বিতরণ করেন।
মানিকগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মকছেদুল মোমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ডা. ফজলে বারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠলে শিক্ষার্থীরা বিষয়টি অবহিত হয় ও তাকে আটকে ফেলে। পরে তিনি দায় স্বীকার করেন। এরপর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) তিনি পদত্যাগ করেন। একই সঙ্গে ওই হাসপাতালের সিনিয়র নার্স রুনা আক্তার ও প্রধান সহকারী আশরাফুজ্জামান ফরিদ পদত্যাগ করেন।
এর আগে পিরোজপুরের জেলার নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা থাকাকালে নারী কেলেঙ্কারিসহ অর্থ লুটপাটের সাথে জড়িত ছিলেন ডা. ফজলে বারী। এমনকি গত ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে ঘাস খেতে আসা একটি ছাগল আটকে কর্মচারীদের দিয়ে জবাই করে ভূরিভোজ করেন তিনি।
এ ঘটনায় ছাগলটির মালিক স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল লায়েক ফরাজী বাদী হয়ে ওই বছরের ২ ডিসেম্বর পিরোজপুর জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। তার এসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে তখন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে গত ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি তাকে বদলি করা হয়। এর আগে তিনি গত ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি নাজিরপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের শিবাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসাবে যোগদানের পর থেকে তিনি পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতার নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ, ছদ্মনামে হাসপাতালে ঠিকাদারি কাজসহ নারী কেলেঙ্কারির অপকর্মে জড়ান।
এ বিষয়ে জানতে পদত্যাগ করা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে বারীকে ফোন দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি। এমনকি খুদেবার্তা দিলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।