বরিশাল
আজীবন বহিষ্কার হওয়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন
নিজস্ব প্রতিবেদক : আজীবন বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী যাদব কুমার ঘোষ। বুধবার (১০ জুলাই) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় ব্যানার টানিয়ে এ কর্মসূচি পালন শুরু করে যাদব কুমার ঘোষ।
তিনি দাবি করেছেন, তাকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিও জানান তিনি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, অসদুপায় অবলম্বন ও পরীক্ষা কক্ষে শিক্ষকের সাথে অশোভন আচরণের দায়ে যাদবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে এই প্রথম কোনো শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কারাদেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, যাদব কুমার ঘোষ চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় মিডটার্ম পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করেন। নকল দেখে লেখার সময়ে প্রধান কক্ষ পরিদর্শক শিক্ষক মো. সাকিবুল ইসলাম তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তার কাছ থেকে উত্তরপত্র নিতে চাইলে যাদব সেটি না দিয়ে শিক্ষকের সঙ্গে জোরজবরদস্তি ও অসদাচরণ করেন। পরে মো. সাকিবুল ইসলাম বিষয়টি পরীক্ষা কমিটিকে জানান।
পরীক্ষা সংক্রান্ত শৃঙ্খলা কমিটি তার অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত কমিটিকে জানায়। কমিটিও কার্যক্রম শুরু করে প্রমাণ পায়। এরপর পরীক্ষা আইনের একটি ধারায় শিক্ষার্থী যাদব কুমার ঘোষের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রত্ব বাতিলের শাস্তি প্রদানের সুপারিশ করে কমিটি। যা ৪৪তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় উপস্থাপন করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩তম সিন্ডিকেট সভায় যাদবের ছাত্রত্ব বাতিলের সুপারিশ পেশ করা হয়।
বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার একদিনের মাথায় আমরণ অনশনে বসেন ববির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী যাদব কুমার ঘোষ। তিনি আগের পরীক্ষাগুলোয় কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেছেন বলে জানান। পাশাপাশি চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগটি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। শ্রেণিকক্ষে ফেরার জন্য উপাচার্য বরাবর তিনি আবেদনও করেন।
আবেদনে তিনি লেখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সাহিত্য সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকা এবং বিভাগের সংশ্লিষ্টতায় পূজার আয়োজন করা, অন্য শিক্ষকদের স্নেহভাজন হওয়ায় কোরামগত ক্ষোভসহ বিভিন্ন কারণে শিক্ষক সাকিবুল ইসলাম তাকে দেখতে পারেন না।
সেই ক্ষোভ থেকেই আমার বিরুদ্ধে এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে ওই শিক্ষক সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্দিষ্ট কক্ষে গিয়ে সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাকিবুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। তাকে কল করা হলে তিনি বলেন, আমি মিটিংয়ে ব্যস্ত। পরে কথা বলবো।