বরিশাল
বরিশালে নিশ্চিহ্ন ২৩ খাল, দখলদারের তালিকা হলেও নেয়া হয়নি ব্যবস্থা!
মাত্র ১৪ বছর আগে বরিশাল নগরে ২৩টি খাল ছিলো। দখল দূষণে সব হারিয়ে এখন নামে মাত্র টিকে আছে দুই থেকে তিনটি খাল। বরিশাল নগরীর এই খালগুলো দিন দিন নিশ্চিহ্ন হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। স্থানীয় প্রশাসন সহসাধিক দখলদারের তালিকাও করেছে। কিন্তু খাল উদ্ধারের শক্ত পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষোভ পরিবেশবাদীদের।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারি বর্ষণ নয়, হালকা বৃষ্টিতেই এমন জলাবদ্ধতা হয় বরিশাল নগরে। অলিগলি ছাপিয়ে প্রধান সড়কগুলো থাকে পানিতে টইটুম্বুর। বর্ষা মৌসুমে আতঙ্কে থাকেন নগরবাসী।
এমন জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ হিসেবে পরিবেশবাদীরা খালগুলো নিশ্চিহ্ন হওয়ার বিষয়টি দেখছেন। গত ২০ বছরে শহরের ২৩টি খালের সবগুলোই দখল দূষণে হারিয়ে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঐতিহ্যবাহী জেলখাল। এক সময় এ পথে যাত্রীবাহী, পণ্যবাহী ট্রলার, বড় বড় নৌকা চলাচল করতো। স্থানীয় অর্থনীতির চাকা ঘুরত খালপথে। কিন্তু দখল দূষণে এখন শুধুই স্মৃতি। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় প্রতিনিয়ত চলছে দূষণ দখলের মহোৎসব।
স্থানীয়রা জানান, এই খালে এক সময় বানারিপাড়া থেকে চালের ও গয়না নিয়ে বড় বড় নৌকা নাজিরপুর ঘাটে ভিড়ত। এখন এটা মরা খাল; যে যেভাবে পারছে, দখল করছে।
এ দিকে নগরীর ২৩টি খালের বিভিন্ন পয়েন্টে দখলদারের সংখ্যা এখন এক হাজারের বেশি। সিটি করপোরেশনের বিগত ৪টি পরিষদের অবহেলায় খালগুলো দখলের সুযোগ পেয়েছে দখলদাররা বলে জানান বরিশালের পরিবেশবিদ আহসান মুরাদ বাপ্পি।
তিনি বলেন, এ খালগুলো রক্ষার দায়িত্ব বরিশাল সিটি করপোরেশনের। তবে তাদের ঘাটতির কারণে এ খালগুলোর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর সাহিন শিকদার বলেন, খাল দখলদারদের তালিকা প্রস্তুত। দ্রুত উচ্ছেদ অভিযান চালানোর পাশাপাশি খালগুলো সংস্কার করা হবে। কোন কোন খালে কতজন দখলদার আছে সেটা দেখে আমরা খালগুলো মুক্ত করবো ইনশাআল্লাহ।
বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন সহায়তা চাইলে আমরা তা করবো। এ ছাড়া আমরা সমন্বয় করে কাজ করবো।
২০১০ সালে নগরীর মাস্টার প্লানে ২৩টি খালের তথ্য থাকলেও এখন নামেমাত্র টিকে আছে ২ থেকে ৩টি।