বরিশাল
বরিশালে ডিবি ইন্সপেক্টর আলমগীরের তোলা বাণিজ্যে বাড়ছে অপরাধ
বরিশাল ব্যুরো।।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর গোয়েন্দা শাখার ইন্সপেক্টর আলমগীর (এডমিন) এর তোলা বাণিজ্যে অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
মাদক বিক্রেতা, পতিতাবৃত্তি, জুয়ার আসর, রোগীর দালালসহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের কাছ থেকে মাসোয়ারা তোলেন ইন্সপেক্টর আলমগীর।
বিতর্কিত ইন্সপেক্টর আলমগীরের বিরুদ্ধে রয়েছে বিভাগীয় মামলাসহ একাধিক অভিযোগ। সম্পদের পাহাড় বানিয়েছেন নিজ নামেসহ তার তিনজন স্ত্রীর নামেও। নিজ নামে রয়েছে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র। আছে একাধিক ব্যবসা।
বরিশাল নগর গোয়েন্দা শাখার এই ইন্সপেক্টর আলমগীর ধরাকে সরা করে তার ক্ষমতাবলে পুরো মেট্রোপলিটন এলাকায় গড়ে তুলেছেন তার তোলা বাণিজ্যে। এতেকরে অপরাধের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।
সরজমিন সূত্র থেকে জানা যায়, বরিশাল নগরের চিহ্নিত মাদক বিক্রেতাদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা তোলেন ইন্সপেক্টর আলমগীর। শুধু মাদক বিক্রেতা নয়, রোগীর দালাল, জুয়ার আসর, পতিতাবৃত্তিসহ সকল অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডের জড়িতদের কাছ থেকে মাসোয়ারা তোলেন তিনি। মাসোহারা তোলা ছাড়াও মামলা দেয়ার ভয় দেখিয়ে ও মামলার চার্জশিট থেকে বাদ দেয়ার নাম করেও হাতিয়ে নেন অর্থ।
এনিয়ে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিতও হয়েছেন তিনি। তবে এতকিছুর পরেও শুধরাইনি তিনি।
গতমাসে বরিশাল কোর্ট চত্তরে এক নারী আসামী ও মহুরিদের হাতে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিতর ঘটনা ঘটছে বলেও জানা গিয়েছে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, মাদক মামলায় চার্জশিট থেকে বাদ দেয়ার নাম করে আশি হাজার টাকা নেয় ইন্সপেক্টর আলমগীর। তবে টাকা নিলেও চার্জশিট থেকে বাদ না দেয়ায় গতমাসে কোর্ট চত্তরে বসে তাকে বেধড়ক মারধর করেন ঐ আসামীপক্ষ ও মধ্যস্থকারী এক আইনজীবী সহকারী।
সেসময় কোর্টে ডিউটিরত পুলিশ সদস্য ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেন।
বরিশাল নগরীর পতিতাবৃত্তির মূলহোতা মনিরের সাথে ইন্সপেক্টর আলমগীরের রয়েছে গভীর সখ্যতা। মনিরের ম্যানেজার আল-আমীন বলেন, প্রতিমাসে ইন্সপেক্টর আলমগীর স্যার তার লোক পাঠায় এবং তার কাছেই তার মাসোহারা দিয়ে দেই। বিনিময়ে হোটেল রেড হওয়ার আগেই-সে মোবাইল ফোনে জানিয়ে দেয়। আমরা নিরাপদে সরে যাই।
ইন্সপেক্টর আলমগীরের বিষয়ে নগরের রোগীর দালালের মূলহোতা সদর রোডের স্বপন বলেন, ডিবি আলমগীর স্যার প্রতিমাসে একটা বিকাশ নাম্বার দেয় আমরা সবাই মিলে সেটা পরিশোধ করি। এজন্য তারা আমাদের কখও ডিস্টার্ব করেনা। এররকম প্রতিটা অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের কাছ থেকে মাসোয়ারা তোলেন ইন্সপেক্টর আলমগীর।
একই অভিযোগ চরকাউয়ার বাসিন্দা আওলাদ হোসেনের, তিনি বলেন প্রতিমাসে ইন্সপেক্টর আলমগীরকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হয়। নাহলে পরতে হয় মামলার ঝুটঝামেলায়।
এরকম একজন প্রশাসনের কর্মকর্তা যদি সকল অপরাধীদের কাছ থেকে মাসোয়ারা তোলেন তাহলে অপরাধ নির্মূলের পরিবর্তে প্রতিনিয়ত অপরাধ বাড়বে বলেই সকলের ধারণা।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করে তিনি বলেন, এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা হয়তো কিছু মানুষ আমার ক্ষতি করার জন্য আপনাদের কাছে আমার নামে প্রভাকান্ড ছড়াচ্ছে। তবে বিভাগীয় মামলার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। এসময় তিনি আরও বলেন, কাজ করলে ভুল ত্রুটি হবেই আমিও ভুলের ঊর্ধ্বে নই। বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।