বরিশাল
প্রতিনিয়ত অভিযান চালাতে থানা পুলিশকে বলা হয়েছে - উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ)
ফের বরিশাল নগরীর আবাসিক হোটেল গুলোতে চলছে অনৈতিক কর্মকান্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিলো বরিশাল নগরের আবাসিক হোটেলগুলোতে অনৈতিক কর্মকাণ্ড। গা ঢাকা দিয়ে ছিল ঐসব অসাধু দালাল চক্রের সদস্যরা। সাম্প্রতিক সময়ে ফের দালালচক্রের সক্রিয়তা এবং আধিপত্য এমন আকার ধারণ করেছে যা নিয়ে মানুষ অতিষ্ঠ। অনেকটা প্রকাশ্যে আবাসিক হোটেলগুলোতে পতিতাবৃত্তি, মাদকের আড্ডা ও জমজমাট জুয়ার আসর চালাচ্ছে এই চক্রটি। বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড, চকবাজার, বিউটি হলের গল্লি, বান্দরোড, মহসীন মার্কেট, গির্জামহল্লা, সদর রোড এলাকার হোটেল গুলোতে প্রকাশ্যেই চলছে এসব অনৈতিক কর্মকান্ড।
সরজমিন সূত্র বলছে, নির্বাচনকালীন সময়ে প্রশাসনের রদবদলের সুযোগে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে গোপন চুক্তি করে এই সকল অবৈধ ও অনৈতিক কর্মকান্ড সচল করেছেন চক্রটি। সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত এসব আবাসিক হোটেল গুলোতে চলে পতিতাবৃত্তি, মাদকের আড্ডা ও জুয়ার আসর। ”পতিতাবৃত্তির নেতৃত্বদানকারী মনির” বহুবছর যাবত বরিশাল নগরীতে এসব কর্মকাণ্ড চালালেও অদৃশ্য কারনে তাকে আটক করা হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই মনির বছরের পর বছর জুড়ে চালিয়ে আসছে এসব অবৈধ কর্মকান্ড। এছাড়াও পতিতা ব্যবসায়ী মনিরের রয়েছে একাধিক হোটেল। পাশাপাশি মহসীন মার্কেটে আজিজের পরিচালনাধীন হোটেল উজিরপুর, সোহাগের মালিকানাধীন পোর্ট রোডে সিভিউ ও গালিবসহ তিনটি হোটেল চালায় মনির। প্রতিটি হোটেল তার শ্যালক আল আমিনকে দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করায়। পোর্ট রোড ব্রিজ এলাকায় হোটেল অতিথি চালায় এই আল-আমিন। এছাড়াও হাসপাতাল রোডে হোটেল প্যারাডাইস সহ আরও বেশকিছু হোটেলে প্রকাশ্যে চলে পতিতা বাণিজ্য।
অপরদিকে একসময়ের হোটেল বয় মানিক এখন নিজেই পরিচালনা করছেন নগরীর সদররোডে অবস্থিত হোটেল শামস। অভিযোগ রয়েছে, স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ সকল অবৈধ মেলামেশার নিরাপদ স্থান হোটেল শামস। শুধু তাই নয়, একধিক সূত্র থেকে আরো জানা গেছে, সদর রোডে অবস্থিত হোটেল শামস ও গির্জামহল্লায় হোটেল ইম্পেরিয়ালে ভিআইপি ভাবে চলে নারী, জুয়া ও মাদকের আসর। আর এসবের নেতৃত্বে রয়েছে একসময়ের হোটেল বয় মানিক। এদিকে বেশিরভাগ হোটেলে দেখা যায় ইয়াবা সেবন ও জুয়ার আসরের জন্য ঘন্টা চুক্তিতে ভাড়া নেয় হয়। রুম ভাড়া নিয়ে চালায় এসব অবৈধ কার্যকলাপ। আবাসিক হোটেলে এসব কার্যকলাপের দিকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি জরুরি বলেও মনে করছেন সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ।
তবে এসব ঘটনার অনেকটা সত্যতা স্বীকার করে কোতোয়ালি মডেল থানার (ওসি তদন্ত) আমানউল্লাহ বারী বলেন, এধরনের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে এবং থাকবে। অপরাধীরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন আইনের হাত থেকে কেউ রক্ষা পাবেনা। এবিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো: ফজলুল করিম বলেন, আমার কাছেও এধরনের মেসেজ আছে তাই প্রতিনিয়ত অভিযান চালাতে থানা পুলিশকে বলা হয়েছে। আশা করি অচিরেই এই সমস্যার সমাধান হবে।