জাতীয়
বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল বলেই বাংলাদেশ হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মেছিলেন বলেই পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছে। তার জন্মই হয়েছিল এই বাঙালি জাতিকে একটি আত্মপরিচয়, স্বতন্ত্র জাতিসত্তা ও স্বতন্ত্র রাষ্ট্র দেয়ার জন্য।’ বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রোববার এই আলোচনার আয়োজন করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বলেন, ‘মাতৃভাষার আন্দোলন দিয়ে যাত্রা শুরু করেন বঙ্গবন্ধু। তারই হাত ধরে আসে দেশের স্বাধীনতা। দেশ গঠনের জন্য তিনি অল্প কিছুদিন সময় পেয়েছিলেন। তার মধ্যেই একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রের ভিত রচনা করেছিলেন। ‘একটি উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্রের যা যা প্রয়োজন তার সবই গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু পাকিস্তানের দোসরদের সঙ্গে এদেশীয় কিছু বেঈমান মিলে তাকে হত্যা করে দেশের স্বাধীনতার চেতনা ধ্বংস করে। থমকে যায় সামনে এগিয়ে যাওয়া। পেছনের দিকে হাঁটতে থাকে দেশ। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেই চেতনা ফিরিয়ে আনে।’
স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দল আওয়ামী লীগকেও বার বার ধ্বংসের অপচেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেন দলটির সভাপতি। তিনি বলেন, হাজার অত্যাচার আর নির্যাতন করেও আওয়ামী লীগকে কেউ দমাতে পারেনি। আওয়ামী লীগ একটি আদর্শ নিয়ে এগিয়ে গেছে, বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনা নিয়ে এগিয়ে গেছে। যে দল মাটি ও মানুষ থেকে গড়ে ওঠে তার শেকড় উপড়ে ফেলা যায় না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেই এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে শুরু করেন। ইতিহাস শুধু বিকৃত করা নয়, স্বাধীনতার আদর্শকে বিসর্জন দেন তিনি। বাংলাদেশের মানুষ আবার সেই অন্ধকারে হারিয়ে যেতে বসে। ১৯৭৫ থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত, আবার ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত মানুষের ভাগ্য নিয়ে শুধু ছিনিমিনি খেলা হয়েছে।’
বিএনপির কোনো শেকড় নেই মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এরা (বিএনপি) অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাতে তৈরি। জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই। জনগণের প্রতি তাদের কোনো আস্থাও নেই। তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে লুটপাতের রাজত্ব কায়েম করেছে।
‘জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ এবং ৩৮ এর আংশিক সংশোধন করে মার্শাল অর্ডিন্যান্স দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন। যারা যুদ্ধাপরাধী, যাদের বিচার শুরু হয়েছিল, তাদেরকেও জিয়াউর রহমান মুক্তি দিয়েছিলেন। এরপর তাদের দিয়ে রাজনৈতিক দল গঠন করান। এমনকি ৭ খুনের আসামিকেও রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া হয়।’
আওয়ামী লীগ মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গ্রামে শহরের সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিতকরণে কাজ করছি। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। শতভাগ ছেলেমেয়ে স্কুলে যাচ্ছে। কর্মসংস্থান বেড়েছে।
‘বিএনপি অন্ধ বলে উন্নয়ন দেখে না। তারা মাইক লাগিয়ে সারাদিন ভাঙা রেকর্ডের মতো মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের করে দেয়া ডিজিটাল দেশের সুবিধা নিয়ে বিএনপি সারাদিন বলে বেড়ায় যে সরকার কোনো উন্নয়ন করেনি।’
আসন্ন রমজান মাসে যাতে মানুষের কষ্ট না হয় সে জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘রমজানে সব ধরনের পণ্যের যথেষ্ট মজুত রয়েছে। এসবের মধ্যে কেউ যাতে মজুতদারি, কালোবাজারি করে জনগণের ভোগান্তি না বাড়ায় সে জন্য সবাইকে নজর রাখতে হবে।’