বরিশাল
স্ত্রীকে ‘কু-প্রস্তাব’ দেওয়ায় অভিযোগে বন্ধুকে খুন, আটক ৩
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীতে নিখোঁজ এক ব্যসায়ীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এক ঘটনায় নাসিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার গভীর রাতে রুপাতলী কাঠালতলা তালুকদার হাউজিং প্রথম গলির নাহার ভিলার চতুর্থ তলা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয় বলে র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান জানান।
নিহত ব্যবসায়ী শাহিন মোল্লা (৩৮) রুপাতলী এমএ খালেক সড়কের বাসিন্দা এনামুল হকের ছেলে। তিনি রুপাতলী কাঠালতলা এলাকায় মেসার্স তাহসিন স্টোর্স নামে একটি সুপার শপ চালাতেন।
আটকরা হলেন-বরগুনার আমতলী উপজেলার কালীপোড়া এলাকার রুহুল আমিন মোল্লার ছেলে জমজম নাসিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ইউসুফ মোল্লা (২০), তার বন্ধু পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার গণ্ডমারী এলাকার রকিবুল ইসলামের ছেলে নাজমুল ইসলাম অমি (১৯) ও বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সোনাহার এলাকার মিজান সিকদারের ছেলে হামিম সিকদার (১৯)।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল বলেন, শাহিন মোল্লা ও ইউসুফ মোল্লা একই এলাকায় থাকতেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এরই মধ্যে ইউসুফের সদ্যবিবাহিতা স্ত্রী স্বর্ণা বিশ্বাসকে শাহীন কু-প্রস্তাব দেয়। এতে ইউসুফ ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিনকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ইউসুফ তার দুই বন্ধু নাজমুল ইসলাম অমি এবং হামিম শিকদারকে নিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি রাত ৯টা ১০ মিনিটে শাহিনের দোকানে যায়। সেখান থেকে শাহীনকে ডেকে রুপাতলী কাঠালতলা তালুকদার হাউজিং প্রথম গলির নাহার ভিলার চতুর্থ তলায় ইউসুফের ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়।
ওই বাসায় গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে শাহীনকে হত্যা করা হয়। পরে লাশ বস্তাবন্দি করে বাথরুমের ফলস ছাদে রেখে দরজা আঠা দিয়ে বন্ধ করে দেয় বলে মাহমুদুল জানান।
তিনি বলেন, শাহিন নিখোঁজের ঘটনায় তার আত্মীয় আব্দুল খালেক হাওলাদার গত ৩০ জানুয়ারি কোতয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর ৩১ জানুয়ারি শাহীনের বোন শিরিন আক্তার মুন্নি র্যাব-৮ এ অভিযোগ দেন।
এরই মধ্যে ২ ফেব্রুয়ারি শিরিনের স্বামীর মোবাইল ফোনে কল দিয়ে কে বা কারা ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে মোবাইল ফোনের মালিক হামিমকে বাকেরগঞ্জ থেকে আটক করে র্যাব।
“তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শুক্রবার রাত ১১টায় নগরীর কাশিপুর থেকে ইউসুফ ও অমিকে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইউসুফের বাসার বাথরুমের ফলস ছাদ থেকে উদ্ধার করা হয় শাহীনের লাশ। লাশ ও আসামিদের বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান এ র্যাব কর্মকর্তা।
শাহীনের ভগ্নিপতি দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, তার শ্যালক ইউসুফের স্ত্রীকে কু-প্রস্তাব দেয়নি। খুনীরা মাদকসেবী। শাহীনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এ ঘটনায় দায়ের করা জিডি হত্যা মামলায় রুপান্তর হবে। আর লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।