আন্তর্জাতিক
বানরের নামে ১০০ বিঘা জমি!
রিপোর্ট দেশজনপদ ॥ ধরুন, আপনার বাবার ১০০ বিঘা জমি রয়েছে ও আপনিই পরিবারের একমাত্র সন্তান। বড় হওয়ার পর আপনি অনেক আশায় রয়েছেন, জমিগুলো সব আপনিই পাবেন। কিন্তু হঠাৎ একদিন ঘুম থেকে উঠে শুনতে পেলেন- আপনাকে নয়, সব জমি আপনার বাবা গ্রামের কোনো এক বানরকে লিখে দিয়েছেন! কেমন লাগবে এমন হলে?
অনেকে হয়তো এমন ঘটনা কল্পনাও করতে পারেন না। কিন্তু ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে ওসমানাবাদ জেলার উপলা গ্রামে আসলেই এমন ঘটনা ঘটেছে। গ্রামটির কোনো এক পঞ্চায়েত কোনো এক সময়ে এক বিঘা নয়, পাঁচ বিঘা নয়, প্রায় ১০০ বিঘা জমি বানরদের নামে লিখে দিয়েছেন।
জানা যায়, বানরের বসবাসের জন্য ওসমানাবাদের উপলা গ্রামের রয়েছে আলাদা পরিচিতি। বছরের পর বছর ধরে এ গ্রাম ও আশেপাশের জঙ্গলে দলবেঁধে বসবাস করে আসছে শতাধিক বানর।
বানরের দল যাতে আরও সাচ্ছন্দে বসবাস করতে পারে, সেজন্য ওই গ্রামের এক পঞ্চায়েত রীতিমতো রেজিস্ট্রি করে দান করে দিয়েছেন ৩২ একর বা ৯৬.৮ বিঘা জমি (এক একর= ৩ দশমিক শূন্য দুই পাঁচ বিঘা)।
গ্রামটির বর্তমান পঞ্চায়েত বাপ্পা পদওয়াল বলেন, খুঁজে পাওয়া জমির নথিতে মালিকানার জায়গায় স্পষ্টভাবে ওই এলাকায় বসবাস করা সব বানরের কথা উল্লেখ আছে। তবে কে বা কোন পঞ্চায়েত, কবে এ কাজ করেছেন, তা আজ পর্যন্ত জানা যায়নি।
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, একটা সময় এখানে ও আশেপাশের জঙ্গলে শত শত বানর বাস করতো। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, বনধ্বংস ও বানরদের স্থানান্তরের কারণে এ সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। কমতে কমতে এখন এখানে মাত্র ১০০টি বানর রয়েছে।
‘বানরদের অভয়ারণ্য গড়ে তুলতে রাজ্যের বন বিভাগ এ জমিতে বনায়ন করেছে। তাছাড়া এখানকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে বানররা বসবাস করায় সেটি ভাঙা হয়নি।’
পঞ্চায়েত আরও বলেন, আগে যখনই গ্রামে কোনো বিয়ে হতো, তখন প্রথমে বানরদের উপহার ও খাবার দেওয়া হতো। তারপর মূল অনুষ্ঠান শুরু হতো। তবে এ প্রথা এখন আর সবাই মানেন না।
জানা যায়, বানরদের বেশ সমাদর করেন উপলার বর্তমান বাসিন্দারাও। নিয়মিত খাওয়ানো তো বটেই, বিয়ের অনুষ্ঠানেও খাওয়ানো হয় বানদের। অতীতে বানরগুলো গ্রামের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের অংশ ছিল।