বরিশাল
পানিতে ভাসছে বরিশাল
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ টানা বৃষ্টি ও নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে নগরীসহ জেলার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে নদী বেষ্টিত বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। ব্যহত হচ্ছে স্বাভাবিক চলাফেরা।
নগরীর অধিকাংশ এলাকার রাস্তায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে নগরবাসী। অতি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাহিরে বের হচ্ছেন না। সড়ক ও নৌপথে চলাচলরত যানবাহনগুলোতেও নেই যাত্রীদের ভিড়। বরিশাল আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে গত তিনদিন ধরে বরিশালে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সেইসাথে আগামী ৪৮ ঘন্টায় আরো বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে।
সোমবার সকালে আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মাহফুজার রহমান জানান, রবিবার সকাল থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত বরিশালে ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এসময়কালে বাতাসের গতিবেগ ছিলো সর্বোচ্চ ১৮ কিলোমিটার। তিনি আরও জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে বরিশাল অঞ্চলের নদী বন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ-হুশিয়ারি সঙ্কেত আর পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখানো হয়েছে। এছাড়া বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি এবং এসব জায়গার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে চার ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
অপরদিকে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সেইসাথে বৃহত্তর মেঘনাসহ অধিকাংশ নদী বেশ উত্তাল রয়েছে। উত্তাল মেঘনা নদী পাড়ি দিতে গিয়ে রবিবার বেলা ১২টার দিকে উলানিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় ৩২০ টন পাথরসহ একটি বাল্কহেড উল্টে ডুবে গেছে।
ঘরের মধ্যে হাঁটু পানি ॥ বাকেরগঞ্জ সংবাদদাতা জিয়াউল হক জানিয়েছেন-পান্ডব নদীর অস্বাভাবিক জোয়ার ও প্রবল বৃষ্টির পানি জমে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে পানি ঢুকে পানিবন্দি হয়ে পরেছেন ওইসব ঘরের বাসিন্দারা। দুধল ইউনিয়নের সুন্দরকাঠি ৮নং ওয়ার্ডের ১২টি গৃহহীন পরিবারের ঘরের মধ্যে প্রায় ৩/৪ ফুট পানি ঢুকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পরেছেন ওইসব ঘরে বসবাসরত পরিবারের সদস্যরা।
দুধল আশ্রয়ণে বসবাসরত কবির খান বলেন, ঘরের ভেতর হাটু পানি জমে তাদের দুর্বিষহ জীবন যাপন করতে হচ্ছে। ভরপাশা আশ্রয়ণে বসবাসরত মামুন হাওলাদার বলেন, রান্না করার মতো শুকনো জায়গা নেই। দুইদিন শুধু শুকনো খাবার খেয়ে বেঁচে আছি। শিশুদের জীবন চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। তারা টেকসই ভেরি বাঁধ নির্মাণ করে আশ্রয়ণে বসবাসের পরিবেশ করে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবী করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সজল চন্দ্র শীল বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।