পটুয়াখালী
পটুয়াখালীতে নিজে স্কুটি চালান, অন্যদেরও প্রশিক্ষণ দেন স্কুলশিক্ষিকা
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ ভোরে ঘুম থেকে উঠে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ করেন ঘরের কাজ। এরপর স্কুটিতে করে সন্তানদের নিয়ে যান স্কুলে। সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে চলে যান নিজের কর্মস্থলে। সেখান থেকে ফিরে মেয়েদের প্রশিক্ষণ দেন স্কুটি চালানোর। এভাবেই ঘরে-বাইরে সব সমানতালে সামলাচ্ছেন পটুয়াখালীর লেডি বাইকার অহিদা পাপড়ি।
পটুয়াখালী শহরের থানা পাড়া এলাকার বাসিন্দা অহিদা পাপড়ি। স্বামী-স্ত্রী দুজনই পেশায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তবে পাপড়ি তার কর্মজীবনকে সহজ করতে ব্যবহার করছেন স্কুটি।
প্রতিদিন সকালে সংসারের কাজ শেষ করে সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যান নিজের স্কুটিতে করে। সেখান থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পৌঁছে যান শহরের অদূরে নিজ কর্মস্থলে। সারাদিন ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান শেষে বাড়ি ফিরে আবারও বেরিয়ে পড়েন স্কুটি চালাতে আগ্রহী নারীদের প্রশিক্ষণ দিতে।
পাপড়ির কাছ থেকে এরই মধ্যে ২০ জনেরও বেশি নারী প্রশিক্ষণ নিয়ে স্কুটি চালাচ্ছেন। অহিদা পাপড়ির কাছ থেকে স্কুটি চালানো শিখছেন ফরিদা পারভীন রিপা। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি একজন সিঙ্গেল মাদার। ঘরে-বাইরে সব কাজ আমাকে একাই করতে হয়।
প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে ৩-৪ বার বাইরে বের হতে হয়। সবসময় রিকশা কিংবা অটোরিকশা পাওয়া যায় না। ভাড়া দিতে গিয়ে অনেক টাকা খরচ হয়। এ কারণে আমি স্কুটি চালানো শিখছি। কিছুদিনের মধ্যে স্কুটি কিনবো।’
স্কুলশিক্ষক শানজিদা এশা বলেন, ‘অনেক সময় রিকশা পাওয়া যায় না। আবার অটোরিকশায় অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করে চড়তে হয়; যেটা মেয়েদের জন্য সেফ না। এ কারণেই আমি স্কুটি চালানোর প্রশিক্ষণ নিচ্ছি।’
চর জৈনকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ওহিদা পাপড়ি বলেন, ‘মোটরসাইকেল বা স্কুটি চালাতে পারলে নির্ধারিত সময়ে যেমন সব কাজ শেষ করা যায় তেমনি অর্থও সাশ্রয় হয়। নারীদের জন্য এটি নিরাপদ। আমার এ বাস্তব অভিজ্ঞতার সুবিধাগুলো যাতে অন্য নারীরাও লুফে নিতে পারেন সেজন্য আমি স্কুটি চালানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।’
ওহিদা পাপড়ির স্বামী ফরহাদ হোসাইন খান বলেন, ‘আমিই আমার স্ত্রীকে স্কুটি চালানো শিখিয়েছি। এরপর সে নিজেই এখন অনেক কাজ করতে পারছে। বিশেষ করে সকালে আগে আমাকে ছেলেদের স্কুলে নিয়ে যেতে হতো। এরপর পাপড়িকে তার স্কুলে নামিয়ে আমার স্কুলে যেতে হতো। কিন্তু এখন পাপড়ি নিজেই ছেলেকে স্কুলে নামিয়ে তার স্কুলে যেতে পারছে।’