কলাপাড়া
সৈকতের পরিধি ক্রমশ ছোট হয়ে পড়ছে কুয়াকাটা সৈকত
নিজস্ব প্রতিবেদক , কলাপাড়া, পটুয়াখালী ॥ অব্যাহত ভাঙ্গনে কুয়াকাটা সৈকতের পরিধি ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। উত্তাল ঢেউ এক এক করে দীর্ঘ সৈকতের বিভিন্ন ধরনের গাছপালা গিলে খেয়েছে। এখন একের পর এক বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা গিলে খাচ্ছে। বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধও রয়েছে হুমকিতে।
আর অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে কুয়াকাটা সৈকতের সৌন্দর্যহানি ঘটছে। ভাঙ্গন প্রতিরোধে স্থায়ী কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় কুয়াকাটার লগ্নিকারক ছাড়াও সকল ধরনের ব্যবসায়ীসহ পর্যটকরা একারণে চরম উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন। সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে দুই দিকে তিন শ’ মিটার এলাকার ভাঙ্গন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড গেল বছরের মতো এ বছরও জিও টিউব স্থাপন করেছে। কিন্তু স্থায়ী কোন প্রতিরক্ষা প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় উত্তাল সাগর আগামি দুই-চার বছরে মূল বাঁধও ঝুকির শঙ্কায় ফেলবে।
বর্তমানে মীরাবাড়ি এবং মাঝিবাড়ি পয়েন্টে বেড়িবাঁধে জোয়ারের সময় ঢেউয়ের ঝাপটা লাগে। পর্যটকরা কুয়াকাটায় বেড়াতে এসে হতাশা ব্যক্ত করে দাবি করেছেন সৈকতের সৌন্দর্য অনেকখানি নষ্ট হয়ে গেছে। বীচ এখন এবড়ো-থেবড়ো হয়ে গেছে। জোয়ারের সময় ওয়াকিং জোন থাকছেনা। সৈকতে পড়ে থাকা জিও ব্যাগসহ বিভিন্ন ধরনের ব্লকে আঘাতপ্রাপ্ত হন। তারা সৈকত রক্ষায় সরকারের জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি করেছেন।
সৈকত ঘুরে দেখা গেছে। জিরো পয়েন্টের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে জিও ব্যাগ। জিও টিউবে জোয়ারের সময় ঢেউয়ের ঝাপটায় ভিতরে পানি প্রবেশ করে ভিতরে আটকে থাকছে। পুকুরের মতো হয়ে যাচ্ছে। ভাঁটার সময় নির্বিঘ্নে চলাচল করা যায় না। জিরো পয়েন্টের পশ্চিম দিকে একটি পাবলিক টয়লেট পড়ে আছে। এটির ময়লা-বর্জ্যরে ট্যাংকি জোয়ারের ঝাপটায় ডুবে যায়। পানি মিশছে সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে। পর্যটকরা বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হন ওই পয়েন্টে গোসলে নেমে। দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কেএম বাচ্চু জানান, এখন বীচের যে অবস্থা তাতে প্রত্যেক বৃহস্পতি ও শুক্রবার গড়ে ৮/১০জন পর্যটক গোসলে নেমে কমবেশি আহত হন। এছাড়া জিরো পয়েন্টের পাবলিক টয়লেটটি দেখে আগত পর্যটকরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ হোসেন জানান, প্রায় ১২ শ’ কোটি টাকা ব্যয় কুয়াকাটা সৈকতের ১২ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা প্রকল্প বর্তমানে প্লানিং কমিশনে দেয়া আছে। জুলাই মাসে এটি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (প্রিএকনেক) সভায় উপস্থাপন হওয়ার কথা রয়েছে।