বরিশাল
শিক্ষক সংকটে বরিশাল শেবাচিম মেডিকেল কলেজ
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে শিক্ষক সংকট চরম আকার ধারন করেছে। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজে শিক্ষকের ২৯০টি পদের মধ্যে ১৮৫টি পদ শূন্য রয়েছে। অধিকাংশ বিভাগ চলছে সহকারী অধ্যাপকদের দিয়ে। এ কারণে চিকিৎসা ক্ষেত্রেও উচ্চ শিক্ষা চালু করা যাচ্ছে না। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
বরিশাল মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন বর্ষে বর্তমানে প্রায় ১২শ’ শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ শিক্ষক নেই অনেক বিভাগে। অধ্যাপকের ৪২টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ৪ জন। অধ্যাপকের ৯০ ভাগ পদ শূন্য। সহযোগী অধ্যাপকের ৭১ ভাগ, সহকারী অধ্যাপক পদে ৫৩ ভাগ এবং প্রভাষক, মেডিকেল অফিসার, প্যাথলজিস্ট, বায়োকেমিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পদে ৬১ ভাগ জনবল শূন্য।
ডেন্টাল বিভাগে ৩৮ জন জনবলের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৬ জন প্রভাষক, মাইক্রোপ্যাথলজিতে ১৬ জনের স্থলে কর্মরত আছেন একজন সহকারী অধ্যাপক ও ৫ জন প্রভাষক। এনাটমি, ফিজিওলজি, সার্জারি, মেডিসিন, নিউরো বিভাগসহ অন্য বিভাগের অবস্থা আরও করুন।
শিক্ষক ও অন্যান্য জনবল সংকটের কারণে মেডিকেল কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থা অনেকটা জোড়াতালি দিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. একেএম আকবর কবির।
শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী পাঠদান করাতে না পেরে শিক্ষকরাও সন্তুষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন মেডিকেল কলেজের প্রভাষক ডা. কাজী মো. আসাদুজ্জামান।
শিক্ষকরা বলেন, বছরের পর বছর ধরে এমন অচলাবস্থা চললেও আজ পর্যন্ত কোনো সুরহা হয়নি। মোট ৫৬ টি বিভাগের এই মেডিকেল কলেজে নিউরো সার্জারি, রক্ত সঞ্চালন, ক্যান্সার, বার্ণ, নিউরো মেডিসিন, মেডিসিন ও গাইনীসহ ৫৪ টি বিভাগে অধ্যাপক না থাকায় পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। সহকারী অধ্যাপক দিয়ে অভিজ্ঞ অধ্যাপকের শিক্ষা না পাওয়ায় হতাশায় কথা জানিয়েছেন মেডিকেল শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান।
তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতেই অধ্যাপক না থাকায় এই কলেজে এমডি এবং এমএস কোর্স চালু করা যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় হচ্ছে না। শিক্ষক শূন্যতার বিষয়ে প্রতিনিয়ত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান।