ঝালকাঠি
দালালমুক্ত হলেও দুর্ভোগ কমছে না সদর হাসপাতালের রোগীদের
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ ঝালকাঠির ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসাসেবা ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেবা নির্বিঘ্ন করতে হাসপাতালকে দালালমুক্ত করার উদ্যোগ নেয় ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতি। এ নিয়ে শনিবার (৬ মার্চ) বিকেলে এক সভার আয়োজন করেন সমিতির নেতৃবৃন্দ।
সভায় সংগঠনের সভাপতি মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন পরিচালনা করেন। এতে উপস্থিতিদের সর্বসম্মতিক্রমে হাসপাতালকে দালালমুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
কিন্তু বিপত্তি বাঁধে একাধিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মালিকানা ও অংশীদার থাকা হাসপাতালের কিছু সরকারি চাকরিজীবীদের নিয়ে। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল না থাকার সুযোগে কর্মরতরা রোববার (৭ মার্চ) সকালে কয়েকজন রোগীকে নিজেদের মালিকানাধীন সেন্টারে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
বিষয়টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালীকে অবহিত করা হয়। দুপুর ১টায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মালিকানা ও অংশীদার থাকা হাসপাতালে সরকারি চাকরিজীবীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন তিনি।
আলোচনা শেষে বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল ও হাসপাতালে কর্মরত কেউই কোনো ল্যাবে রোগী নিতে পারবে না এবং নির্দেশনাও দিতে পারবে না মর্মে সিদ্ধান্ত হয়। ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের দৌরাত্ম্যে রোগীদের নাজেহাল হওয়া যেন এক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। আবার এক দালালের সঙ্গে আরেক সেন্টারের দালালের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনা হাসপাতাল কম্পাউন্ডের মধ্যেই ঘটতো।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব- ৮) একাধিকবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে দালালদের আটক করে। তবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরাই আবার দণ্ডকৃত জরিমানার টাকা দিয়ে এদেরকে ছাড়িয়ে নেন।
অপরদিকে সদর হাসপাতালে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে তা মানছেন না ওষুধ প্রতিনিধিরা।
এই ব্যাপারে ফার্মাসিউটিক্যালস রিপ্রেজেনটেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের (ফারিয়া) সভাপতি মো. নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঝালকাঠির সিভিল সার্জন (সদর হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক) ডা. রতন কুমার ঢালী জানান, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের হাসপাতালে প্রবেশ সবসময় নিষেধ ছিল। এবার কঠোর নির্দেশনার মাধ্যমে বন্ধ করা হয়েছে।
ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে ডাক্তারের স্বাক্ষাতের সময়সীমা নির্দিষ্ট করা আছে। সেটি লঙ্ঘনের অভিযোগও রয়েছে একাধিক। এ ব্যাপারেও দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।