জাতীয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ৭৪ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নগরীতে দোআ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-এমপি’র ৭৪ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বরিশাল কালেক্টরেট জামে মসজিদে বিশেষ দোআ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরিশাল জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল বাদ যোহর ওই দোআ মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামিম-এমপি। প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করে দোয়া- মোনাজাতে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট রাজিব আহমেদ, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব মাহমুদুল হক খান মামুন প্রমূখ। গতকাল সোমবার বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদের আয়োজনে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ৭৪ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামিম-এমপি বলেন, এই বর্ষা মৌসুমে কুড়িগ্রাম এলাকায় ৫ বার বন্যা হয়েছে। যেখানে বিস্তৃত এলাকায় আমি ঘুরে বেড়িয়েছি, মানুষের দুর্দশা দেখেছি। সেই দুর্দশা লাঘবে আমাদের প্রকৌশলীরা রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন। অতীতে না দেখলেও জনগন এবারে একবাক্যে বলেছে, দুর্যোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা তাদের পাশে থেকে কাজ করছে। এজন্য তারা কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন। এটা আমারও ভালো লেগেছে, যে ২ বছরে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে প্রকৌশলীদের মটিভেট করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের প্রকৌশলীদের জনগনের স্বার্থে কাজ করার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে সেটা বোঝাতে পেরেছি। আর সে লক্ষ্যে কাজ করাটা এখন ভালো দিক। ওই সময় প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, কিছুদিন পূর্বে আমি ভোলা গিয়েছিলাম। ইলিশা থেকে চরফ্যাশন পুরো এলাকা ঘুরে এসেছি, নদী ভাঙ্গন দেখেছি। সেখানে আমাদের কিছু কিছু প্রকল্প সেখানে চলমান রয়েছে, আরো কিছু প্রকল্প নেয়ার কথা স্থানীয় সংসদ সদস্যরা বলেছেন। যেগুলোর ব্যাপারে আমরা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। তিনি বলেন, সাতক্ষীরাতে আম্ফানে বিপুল পরিমানে ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। সেখানে আমরা চারটি প্রকল্প নিয়েছি, তিনটি প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আর পোল্ডার নম্বর-৫ এ একটি প্রকল্প আমাদের মন্ত্রণালয়ে রয়েছে, যেটা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। প্রকল্পগুলো পাশ হয়ে কাজ শেষ হলে সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় অঞ্চলের লোকজনের দুর্যোগের ঝুঁকি কমে আসবে। এছাড়া উপকূলীয় অঞ্চলে বিশ্ব ব্যাংকের ৩ হাজার ২৮০ কোটি টাকার প্রকল্প চলছে। ১৩৯ টি পোল্ডারের কাজ করার কথা ছিলো কিন্তু সেখান থেকে ১০টির কাজ হচ্ছে। কারণ বিভিন্ন জায়গাতে জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় ওই অর্থে কাজ শেষ হবে না। আমাদের দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে, বন্যা-বৃষ্টি হচ্ছে। বাঁধ উচু করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ৬০ এর দশকে যে বাঁধগুলো উপকূলীয় অঞ্চলে দেয়া হয়েছিলো, সেগুলো জোয়ার-ভাটা প্রতিরোধ করার জন্য। কিন্তু এখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জলোচ্ছাস হচ্ছে। যেগুলোর পরিমাণ ৬-৭ মিটারে গিয়ে দাঁড়ায়। এগুলোর জন্য নতুন করে সমীক্ষা করা হচ্ছে। বাঁধগুলো এমনভাবে উঁচু করা হবে, যাতে পানি গ্রামের ভেতরে ঢুকতে না পারে। জনগনের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, বাঁধের ওপর কেউ ঘরবাড়ি করবেন না। ঘরবাড়ি করলে সেখানে ইঁদুরের বাসা হয়, তখন ইঁদুরের গর্তের কারণে বাঁধগুলো দুর্বল হয়ে যায়, ফলে জোয়ার-ভাটা ও বন্যার সময় সেগুলো প্লাবিত হয় এবং ভেঙ্গে যায়। এছাড়া জনগনকে আহবান জানাবো নদী থেকে অসাধু ব্যবসায়ীদের বালু ওঠাতে দেবেন না। অবৈধভাবে বালু উঠালে যতো শক্তিশালী বাঁধই আমরা করি না কেন তা টেকসই হবে না। আর দেশবাসীর কাছ থেকে অনুরোধ জানাবো, নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে বালু উঠাবেন না, বালু উঠালে জেলা প্রশাসন যে জায়গাতে বালু মহল হিসেবে সনাক্ত করে দেয় সেখান থেকে উঠাবেন। এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে তার প্রতি শুভকামনা দীর্ঘায়ু এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করেন।