পটুয়াখালী
হাবিবুর রহমানের নিজহাতে গড়া ‘সেনা নিকেতনে’ চলছে শোকের মাতম
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার জন্য খুব বেশি দেরি ছিল না। এক বছরের কিছু বেশি সময় চাকরির মেয়াদ ছিল। চাকরি শেষ করে পটুয়াখালী শহরেই পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করার পরিকল্পনা ছিল সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমানের। তবে তার সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেলো।
পটুয়াখালী শহরের বহালগাছিয়া এলাকায় গাজী বাড়িতে তৈরি করা বাড়ির নাম দিয়েছিলেন ‘সেনা নিকেতন’। সেই বাড়ির উঠানেই এখন চলছে শোকের মাতম। বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব কোণে চলছে কবর খোঁড়ার কাজ।
বান্দরবানের রুমার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে জেএসএস সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে নিহত হাবিবুর রহমানের পটুয়াখালীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।
সেনাবাহিনীর সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, বুধবার রাতে বান্দরবানের রুমা জোনের একটি টহল দলের সঙ্গে সন্তু লারমা সমর্থিত জেএসএস মূল দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলিবিনিময়ের ঘটনায় সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান নিহত হন। এ সময় জেএসএসের তিন সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহত হন। এছাড়া একজন সেনাসদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
হাবিবুর রহমানের মৃত্যুর খবরে পটুয়াখালীর নিজ হাতে গড়া বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা ভিড় করছেন। হাবিবুর রহমানের পৈতৃক বাড়ি পটুয়াখালীর মহিপুরে হলেও পটুয়াখালী শহরের ১নং ওয়ার্ডের বহালগাছিয়ায় তিনি বাড়ি করেছেন।
নিহত হাবিবুর রহমানের বড় ছেলে হাসিবুর রহমান বলেন, আব্বার সঙ্গে সবসময় কথা বলতে পারতাম না। তিনি যখন ফোন করতেন তখনই কথা বলতে পারতাম। মোবাইলে নেটওয়ার্ক সমস্যা ছিল। গত রাতে আব্বার সঙ্গে কথা হয়েছে। আব্বা বলেছেন, কোনো ভুল করলে ক্ষমা করে দিও, একটা অভিযানে যাচ্ছি। এরপর আজ সকালে খবর আসলো আব্বা আর নেই।
নিহত হাবিবুর রহমানের বাবা, মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। তার ছোট ছেলেও সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে কর্মরত।