বরিশাল
সিদ্ধান্তহীনতায় বরিশালের ব্যবসায়ীরা
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ আগামাী ১০ মে থেকে বরিশালের মার্কেটগুলো শর্ত সাপেক্ষে খুলে যাবে। এ সিদ্ধান্ত বেশ কয়েকদিনের পুরানো। কিন্তু করোনা আতংকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভূগছেন ব্যবসায়ীরা। “আগে জীবন তারপর অর্থ” এমন ভাবনায় তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নাও খুলতে পারেন। তাদের এ সিদ্ধান্তহীনতা বাস্তব সিদ্ধান্তে রূপ নিতে পারে কয়েক ঘন্টার মধ্যে। কেননা এরই মধ্যে ঢাকা. সিলেট কুমিল্লাসহ বড় বড় নগরীর মার্কেট/বিপনি বিতান/শপিংমল না খোলার সিদ্ধান্ত চলে এসেছে। মে মাস জুড়েই দেশে করোনার বিস্তার ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এখন ৬৪ জেলাতেই এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মাঝে দীর্ঘ লকডাউনে অচল হয়ে পড়েছে জীবন ব্যবস্থা। সন্তানদের মুখে দুমুটো খাবার তুলে দিতে এরই মধ্যে লকডাউন ভেঙ্গে রাস্তায় রিকসাচালক, অটোচালক, হকাররা। সরকারও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৬ মে পর্যন্ত সরকারী ছুটি বর্ধিত করলেও ১০ মে শপিংমল. ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শর্ত সাপেক্ষে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তে চিকিৎসাবীদসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। শপিংমলসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেবে এমন আশংকা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সিলেট বৃহস্পতিবার তাদের মার্কেট না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কুমিল্লাও একই পথে হেটেছে। সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তটি এসেছে আজ। ঢাকার বড় বড় শপিংমল, চকবাজর নিউমর্কেট, মৌচাক খুলছে না। তাহলে বরিশালে কি হবে? বরিশাল জেলা প্রশাসক এরই মধ্যে ১০ মের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে বেশ কিছু শর্তারোপ করেছেন। কিন্তু নগরীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে তাকালে স্পষ্ট যে এখানে সামাজিক দুরুত্ব কোনভাবেই বজায় রাখা সম্ভব না। বিশেষ করে মহসিন মার্কেট, সিটি মার্কেট, চক বাজার অন্যতম। দোকানগুলোর মাঝেই নেই সামাজিক দুরত্ব, তো ক্রেতাদের মধ্যে কিভাবে থাকবে? চকবাজারের বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভূগছেন। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী তাদের প্রতিষ্ঠান না খোলার পক্ষে। চকবাজার মার্কেট সমিতির অন্যতম এক নেতা জানান, বেঁচে থাকলে ব্যবসা করতে পারব। এতবড় রিস্ক এ মার্কেটের অনেকেই নিতে চাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে তারা কাল প্রশাসনের সাথে বসবেন। মহসিন মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক শেখর চন্দ্র দাসও একই কথা বললেন। আগে জীবন, তারপর ব্যবসা। তিনি জানান এ মার্কেটের বেশিরভাগ ব্যবসায়ী তাদের দোকান না খোলার পক্ষে। আগামীকাল তারা এ নিয়ে জরুরী সভায় বসে সিদ্ধান্ত নেবেন। গীর্জা মহল্লার জেমিনিস এর অন্যতম স্বত্বাধিকারী বাবু জানান, কর্মচারীরাই আসতে চাইছেন না। আর এ ক দিন ব্যবসা করে কতটাকাই বা ব্যবসা করব। বেচে থাকলে অনেক আয় করা যাবে। বরিশাল চেম্বর অব কমার্সের সভাপতি, বিশিষ্ট শিল্পপতি সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, বরিশালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ঢাকারমত খোলামেলা নয়। ঢাকা যদি বন্ধ করে দেয় তাহলে এখানকার ব্যবসায়ীদের মনোভাবতো পরিস্কার। তবে এ বিষয়ে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আমরা সবাই। পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন তাই হবে।
সূত্র:দি বরিশাল