বরিশাল
লঞ্চ ও পন্টুনে মাঝে চাপা পড়ে পা হারালেন রিনা
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ লঞ্চ ও পন্টুনের মাঝে চাপা পড়ে রিনা আক্তার (২৯) নামের এক নারীর পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।এ ঘটনা দেখে পন্টুনে থাকা তিন যাত্রী জ্ঞানও হারিয়ে ফেলেন। অন্যদিকে জ্ঞান হারানো তিন যাত্রীর মুখে পানি ছিটানো হলে তারা স্বাভাবিক হন।
সোমবার (৩ অক্টোবর) তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছেন বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসাপাতালের চিকিৎসকরা।
তারা জানান, রোববার (২ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে রিনাকে শেবাচিম হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে হাড় গুড়োগুড়ো হয়ে গেছে। তারপরও পা না কেটে সবকিছু ম্যানেজ করে ব্যাক স্লাব দিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, যতটুকু জেনেছি রিনাকে প্রথমে উদ্ধার করে রোববার রাতেই মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে থেকে রাতেই শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে এখন তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা খোঁজখবর রাখছি। থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ দিলে পরে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে থানার উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, আহত রিনা তার মা ফাতেমা বেগমকে ঢাকাগামী লঞ্চে উঠিয়ে দিতে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ার কালিগঞ্জ লঞ্চঘাটে গিয়েছিলেন। এমভি ফারহান-৪ লঞ্চটি ঘাটে ভিড়লে রিনা তার মা ফাতেমাকে নিয়ে লঞ্চে উঠছিলেন। এ সময় লঞ্চ ও পন্টুনের মাঝে চাপা খেয়ে বাম পায়ে গুরুতর জখম হয়। প্রচুর রক্তক্ষরণের পাশাপাশি হাঁটুর নিচের অংশ চামড়ার সঙ্গে ঝুলেছিল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তার পায়ের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তাকে এখানে রাখা সম্ভব হয়নি।
তিনি জানান, রিনার পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি এ ঘটনায় লঞ্চচালক, মাস্টার বা স্টাফদের কোনো ধরনের গাফিলতি কিংবা অবহেলা ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, রোববার (২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকাগামী এমভি ফারহান-৪ লঞ্চটি ঘাটে ভিড়লে এতে ওঠার জন্য পন্টুনে অপেক্ষারত যাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি লেগে যায়। এ সময় লঞ্চ ও পন্টুনের মাঝে চাপা খেয়ে রিনার বাম পা হাঁটুর নিচ থেকে প্রায় আলাদা হয়ে যায়। এ ঘটনা দেখে পন্টুনে থাকা তিন যাত্রী জ্ঞানও হারিয়ে ফেলেন। এর পরপরই রিনাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অন্যদিকে জ্ঞান হারানো তিন যাত্রীর মুখে পানি ছিটানো হলে তারা স্বাভাবিক হন।