ঝালকাঠি
রাজাপুরে প্রভাবশালীদের খাল দখলের মহোৎসব!
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ ঝালকাঠির রাজাপুরে জমির দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় খাল দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন প্রভাবশালীরা। এক সময়ের খরস্রোতা খালগুলো দখল আর ভরাটের কারণে মরে গেছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাল দখল করে গড়ে উঠেছে বহুতল স্থাপনা, আবার কোথাও কোথাও চলছে পাকা স্থাপনা নিমার্ণের কর্মযজ্ঞ। উপজেলার নৈকাঠি হাওলাদার পাড়া খালটি সন্ধ্যা নদী থেকে শুরু করে লেবুবুনিয়া হয়ে ভান্ডারিয়া বড় নদীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে। খালের মাঝে বাঁশের মাচা ও জাল ব্যবহার করে অভিনব কায়দায় ভরাট করা হচ্ছে।
হাওলাদার পাড়া থেকে শুরু করে পালেরবাড়ী পর্যন্ত বয়ে গেছে আরেকটি ভারানি খাল। যে খালটির ওপর নির্ভর করে প্রায় দেড় হাজার একর ফসলি জমির চাষাবাদ। দখল আর ভরাটের কারণে প্রায় ৩০ ফুটের খালটি আজ ৫ থেকে ৭ ফুটের হয়ে গেছে। খাল ভরাটের কারণে ফসলি জমি থেকে পানি নিষ্কাশন না হওয়ার ধানের ফলন অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে।
লেবুবুনিয়া বাজার ব্রীজ সংলগ্ন খালের মধ্যেই চলছে পাকা ভবন নির্মাণের কাজ। খাল দখল করে একের পর এক ভবন নিমার্ণ করা হচ্ছে। পাকাপুল এলাকায় অভিনব কায়দায় খাল ভরাট করে নির্মাণ করা হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। গালুয়া এলাকায় প্রভাবশালীরা খালের মধ্যেই বহুতল বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন।
উপজেলা সদর ঘুরে দেখা গেছে, খালের চর প্রথমে বেড়া দিয়ে আগলে রেখে পরে তা ভরাট করা হচ্ছে। খাল ও নালা নানা কৌশলে দখলে নিলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ কোনো কথা বলতে পারছে না। তবে চুপ থাকলেও সচেতন মহলের মধ্যে প্রশাসনের বিরুদ্ধে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মধ্য বাজার এলাকা থেকে বয়ে যাওয়া ভারানি খালটি জেলখানার পেছন থেকে বাইপাস এলাকায় ব্রিজ হয়ে তুলাতলার দিকে বয়ে গেছে। দখল আর দূষণে শ্রীহীন ও গতিহারা খালটি এখন মৃতপ্রায়। বাথরুমের ময়লা নিষ্কাশনের পাইপ, ড্র্রেন ও সারি সারি ময়লার স্তুপে ভরাট এবং দখলের কারণে খালটি এখন সরুনালা।
জোয়ারের সময় সামান্য পানি থাকলেও ভাটায় কোনো পানিই থাকে না এই খালে। যে কারণে শহরের কোথাও আগুন লাগলে পানি সঙ্কট দেখা দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পানির উৎস খুঁজে পাওয়া যায় না। এ ছাড়া বৃষ্টি হলেই শহরে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।
উপজেলা সদরের বাইপাস মোড় এলাকায় বিএনপি অফিস-সংলগ্ন এলাকার খালটি বেড়া দিয়ে আটকে ভরাট করে দখল করার বিষয়টি চোখে পড়ার মতো হলেও প্রশাসন নীরব বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, রাজাপুর উপজেলায় দখল হওয়া খালগুলো জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পর্যায়ক্রমে দখলমুক্ত করা হবে।