জাতীয়
মামুনুলদের সাথে খালেদা-তারেকের বিরুদ্ধে মামলা
রিপোর্ট দেশ জনপদ।। ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্যে সহযোগিতা করার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তার ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করা হয়েছে।
মামলায় ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দেয়ায় হেফাজত ইসলামের ভারপ্রাপ্ত আমির জুনায়েদ আহমেদ বাবুনগরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মুহাম্মদ মামুনুল হক ও ইসলামী শাসনতন্ত্রের সৈয়দ ফয়জুল করিমকেও আসামি করা হয়েছে। বুধবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে এ মামলা করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পরে আদেশ দেবেন বলে জানান।
মামলার বাদী এ বি সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।মামলার অভিযোগে বলা হয়, চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ হেফাজত ইসলামের একটি আলোচনা সভায় হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে কোন ধরনের ভাস্কর্য থাকবে না এবং জাতির পিতার ভাস্কর্য করতে দেয়া হবে না। গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম হাটহাজারীতে হেফাজত ইসলামের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত আমির জুনায়েদ আহমেদ বাবুনগরী বলেন, মদিনার সনদে যদি দেশ চলে তাহলে কোন প্রকার ভাস্কর্য থাকতে পারবে না। ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ না করলে আরও একটি শাপলা চত্ত্বর ঘটাবেন বলে সরকারকে হুমকি দেন। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে ইসলামিক শাসনতেন্ত্রর একটি জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে ফয়জুল হক বলেছেন, বাংলাদেশে যদি কোন ভাস্কর্য তৈরি করা হয় তাহলে সব ভাস্কর্য ভেঙে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়া হবে। প্রয়োজনে আবারও শাপলা চত্ত্বরে জমায়েত করা হবে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, এর আগেও বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে শাপলা চত্ত্বরে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সকাল ৬টার মধ্যে শেখ হাসিনার পতন ঘটাবেন। তোমরা সেভাবে কাজ চালিয়ে যাও। তারপর বাবুনগরীর হুকুমে হেফাজত ইসলামের জঙ্গিবাদীরা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অগ্নিসংযোগ করে পবিত্র কোরআন শরীফ পুড়িয়ে ফেলেন। স্বাধীনতার পর থেকেই এই উগ্রপন্থী স্বাধীনতাবিরোধীরা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে এবং জাতির পিতা, দেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে বিশ্বের কাছে দেশকে হেয়পতিপন্ন করছে।
এমতাবস্থায় আবার এই স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানিদের দালালচক্র বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব ইসলামিক জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী জাতির পিতার ভাস্কর্য বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন কার্যকলাপ ও সংঘাত সৃষ্টি করে তাদের গুণ্ডাবাহিনি দিয়ে গত ৪ ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়াতে জাতির পিতার ভাস্কর্যের একটি হাত ভেঙে দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের মধুর ভাস্কর্যের একটি কান ভেঙে দেয়। তাই বাদী মনে করেন, যে পিতার নেতৃত্বে এই দেশের জন্ম হয়েছে। একটি স্বাধীন বাংলাদেশ সেই পিতার হাত ভেঙে এই বিএনপি-জামায়াত, হেফাজত ইসলাম, ইসলামিক শামসনতন্ত্র এই সমস্ত ইসলামিক সংগঠনগুলো যারা এই দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করে পাকিস্তান বানানোর পরিকল্পনা করে এবং স্বাধীনতার স্থাপক জাতির পিতার নাম এই দেশের মাটি থেকে মুছে ফেলতে চায়। তাই ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০/৫০৬/১০৯ ও ৪২৭ ধারায় আসামি করে, অপরাধ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার জারির আবেদন করছি।