বরিশাল সদর
মঙ্গলবার থেকে বরিশাল নগরীর ২টি ওয়ার্ড লকডাউন
নিজস্ব প্রতিবেদক।। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বরিশাল নগরীতে সর্বত্র বিস্তার করায় বরিশালকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছিল গত সপ্তাহে। শহরের ৩০টি ওয়ার্ডের ২৭টি রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে বেশি মাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ দুটি ওয়ার্ডকে পুরোপুরি লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য গত বৃহস্পতিবার ১৮ জুন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল প্রশাসনের শীর্ষসারির কর্মকর্তাদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা পরবর্তী দুটি ওয়ার্ডকে লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে কবে থেকে এই লকডাউন শুরু হবে এবং কত দিনব্যাপী হবে সেটা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। অবশেষে বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ আগামি ২৩ জুন মঙ্গলবার থেকে ২১ দিনব্যাপী নগরীর ১২ ও ২৪ নং ওয়ার্ড লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস। তিনি জানান, প্রথমধাপে বরিশাল নগরের ১২ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডকে পুরোপুরি লকডাউন করা হচ্ছে। পরবর্তিতে অন্য কোন ওয়ার্ড সংযুক্ত করা হবে কি না তা সিদ্ধান্ত নিবেন সিটি মেয়র। এদিকে বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে ‘রেড জোন’র ম্যাপ পাঠানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদফতর তাদের দেয়া নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। রেড জোন ঘোষিত এলাকায় লকডাউন ঘোষণাসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনা বাস্তবায়নের সুপারিশ করে বরিশালের সংশ্লিষ্ট সব দফতর প্রধানদের চিঠি দেয়া হয়েছে। সিভিল সার্জন আরো বলেন, লকডাউনকৃত এলাকার জন্য সরকার যে সব শর্ত পালনের নির্দেশনা দিয়েছেন তা শতভাগ বাস্তবায়ন করা হবে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শাহাবুদ্দিন বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং সিটি কর্পোরেশন লকডাউনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন সহযোগিতা করবে। সেক্ষেত্রে লকডাউন বাস্তবায়ন প্রশ্নে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যেসব নির্দেশনা রয়েছে তার সব আয়োজন সম্পন্ন করে এলাকাগুলো লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। জেলা প্রশাসক এসএস অজিয়র রহমান বলেন, ২৭টি ওয়ার্ড একসঙ্গে লকডাউন করার ক্ষেত্রে অনেক বড় ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে। যেটা অনেক কষ্টসাধ্য, তাই এখনই আমরা সেদিকে যাচ্ছি না। তাছাঙা এই পদ্ধতি বাস্তবায়নে জনগণ কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন সে সম্পর্কেও আমাদের স্পষ্ট কোনো ধারণা নেই। তাই প্রাথমিকভাবে ১২ ও ২৪ নং ওয়ার্ড লকডাউন করা হচ্ছে। ওই নির্দিষ্ট এলাকার লকডাউনকালীন উদ্ভূত সব পরিস্থিতি দেখে পরবর্তিতে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ওয়ার্ডগুলো লকডাউনের আওতা আনা হবে। এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় থেকে প্রদত্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেখানে ‘রেড জোন’ হবে সেই এলাকাকে ব্লক করা হবে। ওই এলাকায় সাধারণ ছুটি থাকবে। রেড জোনে লকডাউন বাস্তবায়ন করবে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভা এবং জেলা প্রশাসন। এছাড়া “রেড জোনে দেয়া লকডাউন ১৪ থেকে ২১ দিনের জন্য প্রযোজ্য হবে। সেখানে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য বুথ বসানো হবে। থাকবে চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স। খাবার, ওষুধ ও বাজারের সব ব্যবস্থা পরিপূর্ণভাবে ভেতরেই করা হবে। সবদিক থেকে ওই এলাকাটিকে ঘিরে দেয়া হবে যাতে মানুষ বাইরে বের হতে না পারে, এবং বাইরে থেকে কেউ ঢুকতে না পারে। উল্লেখ্য যেসব এলাকায় প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ৬০ জন মানুষ কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন সেসব এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে ঘোষণা করে লকডাউনের আওতায় আনা হচ্ছে। ১৫ জুনের পর থেকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করে লকডাউনের কাজ শুরু করার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে ওই প্রজ্ঞাপনে।