ভোলা
ভোলায় নিউমোনিয়ার প্রকোপ, বেড সংকটে বারান্দায় চিকিৎসা
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঋতুর আগেই দেশে হালকা শীত পড়তে শুরু করেছে। এতে ভোলায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। প্রতিদিনই এর সংখ্যা বাড়ছে। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সরা। বেড সংকটে বাধ্য হয়ে বারান্দার মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা।
ভোলা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ দিনে হাসপাতালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৫৮৬ শিশু। এদের মধ্যে মারা গেছে একটি শিশু। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি আছে।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, হঠাৎ নিউমোনিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া বেড সংকট দেখা দিয়েছে। বেড না পেয়ে হাসপাতালে মেঝেতে ও বারান্দায় সন্তানদের চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীর স্বজনরা।
নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর মা কুলসুম বেগম, মাকসুদা বেগম ও নানি ফাতেমা বেগম, সুমাইয়া বেগম এবং মিনারা বেগম জানান, তাদের সন্তানদের নিউমোনিয়া হওয়ায় ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতালে বেড না পেয়ে বাধ্য হয়ে মেঝেতে বসে চিকিৎসা করাচ্ছেন। শীতের মধ্যে মেঝেতে থাকায় সন্তানদের সুস্থতা নিয়ে সংশয়ে আছেন তারা।
তারা আরও জানান, হাসপাতালে ওষুধ ও চিকিৎসা ঠিকমত দিচ্ছে। কিন্তু মেঝেতে ময়লা ও গন্ধের মধ্যে অনেক কষ্ট করে বাধ্য হয়ে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে শিশুদের।
রোজিনা বেগম ও ঝর্না বেগম বলেন, তাদের সন্তানরা নিউমোনিয়া আক্রান্ত হলে তিন দিন ধরে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কিন্তু সংকট থাকায় এক বেডে দু-তিনজন একসঙ্গে রেখে চিকিৎসা চলছে। এক বেডে তিনজন থাকায় ঠিকমতো সন্তানদের দেখাশোনাও করতে পারছেন না তারা।
নিউমোনিয়া আক্রান্ত আরেক শিশুর বাবা সবুজ জানান, পুরাতন ভবনের পাশে হাসপাতালের নতুন একটি ভবন হয়েছে। কিন্তু এটি এখনো চালু হয়নি। যদি হাসপাতালের নতুন ভবনটি চালু হতো তাহলে সন্তানকে শীতের মধ্যে কষ্ট করে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা করাতে হতো না। দ্রুত নতুন ভবনটি চালুর দাবি জানাচ্ছি।
ভোলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা, নবজাতক ও শিশু চিকিৎসক ডা. আবদুল মজিদ (শাকিল) বলেন, হালকা শীতে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিনই প্রায় শতাধিক নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু হাসপাতালে আসছে। কেউ ভর্তি হয় আবার কেউ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ভোলা সিভিল সার্জন ডা. কে. এম শফিকুজ্জামান বলেন, শীতের মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ভোলায় নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেড়ে গেছে। তবে আমরা শিশুদের বাবা-মা ও স্বজনদের শিশুদের গরম পোশাক পরিয়ে রাখা ও ঠান্ডা খাবার না খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে ওষুধ সংকট নেই, চিকিৎসকরা শিশুদের যত্ন সহকারে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এছাড়া নতুন ভবনটি চালু হলে হাসপাতালে বেড সংকট থাকতো না। ভবনটি দ্রুত চালু হবে।