বরিশাল সদর
বরিশাল নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল
ভূয়া সাংবাদিক সংগঠনের ব্যানারে দখল বানিজ্য
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সাংবাদিক পরিচয়ে গজিয়ে ওঠা ছিন্নমূল সংগঠনগুলোর ব্যানারে দখল বানিজ্যে বিব্রত বরিশাল প্রেসক্লাব, রিপোর্টাস ইউনিটি, প্রকাশক ও সম্পাদক পরিষদ এবং পেশাদার সাংবাদিক সংগঠনগুলো। ভূয়া সাংবাদিকের বিচরণতো রয়েছেই পাশাপাশি বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে ভূয়া সাংবাদিক সংগঠনগুলো। সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বরিশাল নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডের মধ্যে কাউন্টার দখল করা হয়েছে “উপজেলা সাংবাদিক ঐক্য পরিষদ” নামের একটি রংচটা ব্যানার সর্বস্ব কক্ষ নিয়ে। ভূয়া সাংবাদিক সংগঠনটির ব্যাপারে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ প্রেসক্লাবের একাধিক সিনিয়র সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, এটি কোন সাংবাদিক সংগঠন নয়। এই নামে কোন সাংবাদিক সংগঠন নেই। এ নিয়ে বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি মানবেন্দ্র বটব্যাল বলেন, এটাতো দৃশ্যমান। তবে আমাদের পেশাগত নিরাপত্তা ও ইমেজ ধরে রাখতে এই ব্যাপারে আরো সোচ্চার হতে হবে। তবে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মিথুন সাহা বলেন, সাংবাদিক সংগঠনগুলো যদি আরো সর্তক থাকে তাহলে এই ধরনের ছিন্নমূল ও ভূয়া সাংবাদিক সংগঠন তৈরী হতে পারবে না। কারণ বিকৃতি কখনো পায়না আকৃতি এটা চিরন্তন কথা। সাধারণ মানুষ সাংবাদিক লেখা সাইনবোর্ড দেখলেই হয়তো একটু আশ্বস্ত হয় কিন্তু আদতে যে আজকাল ভূয়া সাংবাদিক পরিচয়ে ভূয়া বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন তৈরী হচ্ছে তা হয়তো মানুষ তলিয়ে দেখবে না। এই উৎপাত বন্ধে পেশাদার কিংবা মূলধারার সাংবাদিক সংগঠনগুলোর একযোগে কাজ করতে হবে এবং এর কোন বিকল্প নেই। তা না হলে আমরাই পক্ষান্তরে ইমেজ সংকটে পতিত হব। এদিকে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে সাংবাদিক সংগঠনের নামে কাউন্টার দখল করা সংগঠনের সভাপতি/প্রতিষ্ঠাতা ভূয়া সাংবাদিক সৈয়দ নাজমুল ইসলামের এই ০১৭১৬৭১৫৩৯৩ নাম্বারে ফোন করলে তিনি বলেন, ভাই এটি আজই উঠিয়ে নেয়া হবে। কিন্তু বাস টার্মিনালের মধ্যে তো কাউন্টার, পরিবহন সংগঠন, অফিস কিংবা পরিবহন সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যবহৃত হওয়ার বিধান রয়েছে। তাহলে আপনারা কেনো সাংবাদিক সংগঠনের ব্যানারে কাউন্টার দখল করলেন এবং কতিপয় পরিবহন শ্রমিকদেরকেও সাংবাদিক আইডি কার্ডও দিয়েছেন? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে বরং একই কথা আওড়িয়ে বলেন, ভাই ব্যানার সড়িয়ে ফেলবো। এরপর দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার পরিচয় দিয়ে বলেন, আমি ইনকিলাবের উজিরপুর প্রতিনিধি। অথচ এ ব্যাপারে ইনকিলাবের বরিশাল প্রধান সিনিয়র সাংবাদিক নাসিমুল হক বলেন, আমি তাকে চিনি না এবং আমার ইনকিলাবের কোন ব্যাপারে সে জড়িত নয়। তার এই বিতর্কিত কর্মকান্ড নিয়ে এর আগেও একাধিকবার খবর প্রকাশিত হয়েছে। এসময় তিনি আরো বলেন, নগরীর সাংবাদিক সংগঠনগুলোর উচিত এই ধরনের প্রতারকদের পুলিশে সোপর্দ করা। আর এতে পেশাদার সাংবাদিকদেরই সম্মানহানী হচ্ছে। অপরদিকে, বরিশাল জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বাস টার্মিনাল বরিশাল সিটি কর্পোরেশন করে দিয়েছে মূলত পরিবহন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য এবং সে লক্ষ্যেই বিসিসি বাস মালিকদেরকে ভাড়া দিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে এখানে অন্য কোন পেশার অফিস হওয়া অবৈধ। তাহলে আপনারা এতোদিন এই ভূয়া সংগঠনের বিরুদ্ধে কেনো প্রতিবাদ করেন নি? এসময় তিনি বলেন, সে যে ভূয়া আমরা জানতাম না। সে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার একজন সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিতেন। অপরদিকে, নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের মধ্যে সাংবাদিক সংগঠনের ব্যানারে কাউন্টার দখলের ব্যাপারে একাধিক সূত্র জানায়, বাসস্ট্যান্ড তোলাবাজ খ্যাত কথিত শ্রমিকলীগ নেতা ও চাঁদাবাজি মামলায় কারাবাসকারী লিটন মোল্লা বাস টার্মিনালকে ঘিরে চাঁদাবাজি অব্যাহত রাখার ঢাল মনে করে ব্যানার সর্বস্ব এ সংগঠনটির নামে কক্ষটি দখল করে। মূলত এখানে কোন সাংবাদিক নেই এবং নগরীর কোন সাংবাদিক সংগঠনও এদেরকে চেনে না। আর এই ভূয়া সাংবাদিক সৈয়দ নাজমুল ইসলামের ব্যাপারে একাধিক সূত্র জানায়, উজিরপুরে বিতর্কিত কার্যক্রমের কারণে বিতাড়িত হয়ে এখন নগরীর উপকন্ঠের দলীয় আগাছাদের সাথে যোগসাজোস করে ধান্দাবাজিতে লিপ্ত রয়েছে। যে কারণে তোলাবাজ লিটনের চামুন্ডা হয়ে বরিশাল বিভাগীয় শহরে একাধিক সাংবাদিক সংগঠনের নাকের ডগায় একটি ভূয়া সাংবাদিক সংগঠনের কক্ষ খুলে সাংবাদিক অঙ্গনের ইমেজ সংকট তৈরী করছে। এ নিয়ে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় জনশ্র“তিও রয়েছে তোলাবাজ লিটনের চ্যালা এখন ভূয়া সাংবাদিক। এ নিয়ে উজিরপুর থানার একাধিক সাংবাদিক জানায়, সে মূলত সাংবাদিক নয় এবং এর বাড়ি গুঠিয়া এলাকায়। তার এ ধরণের বির্তকিত কর্মকান্ড নতুন কিছু নয়। পুরো উপজেলা জুড়ে অনেকেই তার বির্তকিত কর্মকান্ড সম্পর্কে জানে। এখন সে হয়তো বরিশালে সাংবাদিক পরিচয়ে আবার কোন নতুন মিশন শুরু করেছে। সাংবাদিক পরিচয়ে ভূয়া সংগঠনের উৎপাত বন্ধের ব্যাপারে বরিশাল প্রকাশক ও সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজি মিরাজ বলেন, আমরা আমাদের কষ্টার্জিত ইমেজ ধরে রাখতে বদ্ধ পরিকর। কোনভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। আমরা এ ধরণের দূষিত আত্মাকে বানের জলে ভাসিয়ে দেবো।