বরিশাল
বরিশালে আদালত প্রাঙ্গণে হামলায় আহত ২০ ফটোসাংবাদিক
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ জালিয়াতি মামলায় বরিশালের বাকেরগঞ্জের দাড়িয়াল ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামসহ পাঁচজনকে জেলহাজতে প্রেরণের চিত্র ধারণ করতে গেলে ফটোসাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে আইনজীবী সহকারী ও ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকরা। আজ বুধবার বিকালে বরিশাল আদালত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন সাংবাদিক আহত হন। এদের মধ্যে ১৮ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তাঁরা হলেন, আমাদের বরিশাল পত্রিকার ফটোসাংবাদিক মো. নাঈম, আহসান আকিব, মতবাদের এন আমিন রাসেল, বাংলার বনের শাফিন আহমেদ রাতুল, জিয়াদ, জুয়েল, আজকের বরিশালের সাইফুল ইসলাম, সুজন হাওলাদার, আবু কালাম আজাদ (সোহাগ), সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়, বাংলা ভিশন চ্যানেলের কামাল হোসেন, মোহনা টেলিভিশনের অপূর্ব বাড়ৈ, যমুনা টেলিভিশনের শুভ হাওলাদার, মাই টিভির শফিক হোসেন, লিটন মোল্লা, প্রথম সকাল পত্রিকার বার্তা সম্পাদক সুমাইয়া জিসান ও সুন্দরবন পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মিজান পলাশসহ মোট ১৮ জন।
আহতরা জানান, দাড়িয়াল ইউপি চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনকে জালিয়াতি মামলায় জেলহাজতে প্রেরণের খবরে আদালত প্রাঙ্গণে ফটোসাংবাদিকরা যায়। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যানের ছবি ধারণের সময় চেয়ারম্যানের ভাইপো সুজন হাওলাদার, সাইফুল ও আইনজীবী সহকারী কামরুজ্জামান, বাপ্পিসহ বেশ কজন ফটোসাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়।
প্রথম দফার হামলায় বেশ কজন ফটোসাংবাদিক আহত হন। পরে প্রতিবাদ করতে গেলে ফটোসাংবাদিকদের ওপর দ্বিতীয় দফা হামলা চালানো হয়। একপর্যায়ে আদালতের সামনে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয় সাংবাদিকদের। ভাঙচুর করা হয় সাংবাদিকদের ৬/৭টি মোটরসাইকেল। এরপর অন্যান্য সাংবাদিকরা আদালত প্রাঙ্গণে গেলে তাদের ক্যামেরাও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে আইনজীবী সহকারীরা। এদিকে হামলায় অনেক সাংবাদিকের মোবাইল ও নগদ অর্থ লুটে নেয় আইনজীবী সহকারীরা।
পরে বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কবির উদ্দিন প্রামানিক ও বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলমে খোকন ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পুলিশের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বরিশালের সকল সাংবাদিকদের সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল বিশ্বাস জানান, আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে কিছু মাদকসেবী আইনজীবী সহকারী। আমরা দেখেছি হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া কয়েকজনের বিরুদ্ধে মাদক ও নারী নির্যাতন মামলাও রয়েছে। নেশায় বুঁদ হয়ে এমর ঘটনা ঘটিয়েছে আইনজীবী সহকারীরা।
বরিশাল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন বলেন, আহতদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। আপাতত আহতদের মধ্যে ১৮ জনকে ভর্তি করেছি। পরবর্তী করণীয় বিষয়ে যথাসময়ে জানানো হবে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।