বরিশাল
বেপরোয়া বাইকে অনিরাপদ সড়ক
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ অদক্ষ আর বেপরোয়া মোটরবাইক চালকদের কারণে ক্রমেই অনিরাপদ হয়ে উঠছে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন সড়ক। প্রতিদিন রাস্তায় নামছে নতুন মোটরবাইক। একে অন্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাইক চালাতে গিয়ে নিজেরা দুর্ঘটনায় পড়ছে এবং দুর্ঘটনার অনুঘটক হিসেবেও কাজ করছে।
হাঁটার রাস্তায় একের পর এক মোটরসাইকেল উঠে যায়। পথচারীদের থামিয়ে দিয়ে উচ্চ শব্দে হর্ন বাজিয়ে ফুটপাথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে সারি সারি মোটরসাইকেল। শুধু ফুটপাত না, এঁকে বেঁকে উল্টোপথে বাইক চলছে দ্রুতবেগে। বেপরোয়া এই চলাচলের কারণে সমস্যা পোহাতে হচ্ছে অন্য যানবাহনের চালকদের। তাদের অভিযোগ, আগে যাওয়ার জন্য দৌড়ায়, সাইড দিয়া যাওয়ার সময় গাড়ি ঢুকিয়ে দেয় তখন আমাদের ব্রেক মারতে হয়।
যদিও ট্রাফিক পুলিশের দাবি, পরিস্থিতি অনেকটা উন্নত হলেও নিয়ম ভাঙার প্রবণতা বন্ধ হয়নি। অন্যের তো বটেই, নিজের নিরাপত্তার জন্যই সচেতন হওয়া উচিত মোটরসাইকেল চালকদের।
গত কয়েক দিনে সদর রোড, লঞ্চঘাট সড়ক, সিঅ্যান্ডবি সড়ক, রূপাতলী সড়ক ও বিএম কলেজ সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, উঠতি বয়সী ছেলেরা বেপরোয়া গতিতে বিভিন্ন কোম্পানীর আপডেট মডেলের মোটরসাইকেল চালিয়ে থাকেন। এদের বেশিরভাগই ১৫-১৮ বছর বয়সী। এই বাইকাররা কোনো রকম ট্রাফিক সিগন্যাল মানে না। সুযোগ পেলেই দ্রুত সিগন্যাল ডিঙিয়ে ছোটে। সড়কজুড়ে বাইকাররা নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী বেপরোয়া গতিতে ও প্রচন্ড শব্দ করে বাইক চালায়। এতে চলমান গাড়িগুলোর চালকরা হকচকিয়ে যায়। এজন্য প্রায়ই রাস্তায় বাইকারদের সঙ্গে প্রাইভেট গাড়ি থেকে শুরু করে অন্যান্য যানবাহনের চালকদের বচসায় লিপ্ত হতে দেখা যায়। বাইকারদের কারণে রাস্তায় হুটহাট গাড়ি ব্রেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ছে যানবাহনগুলো।
বড়লোকের বখে যাওয়া সন্তানরা মোটরসাইকেলের সাইলেন্সার পাইপ খুলে রেখে বিকট শব্দ তুলে নগরময় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। আবার কেউ কেউ গাড়িতে ডিজিটাল হর্ন লাগিয়ে কুরুচিপূর্ণ নানা শব্দ বাজিয়ে চলছে। গাড়ির ব্রেকের সঙ্গে সংযোজন হয়েছে এ ধরনের নানা ব্রেক সাউন্ডও। আছে সাইড ইন্ডিকেটর সাউন্ড। এতো কিছুর পরেও বাইকারদের নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়ে কারও কোনো মাথা ব্যথা নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালকদের অধিকাংশেরই নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশনসহ প্রয়োজনীয় কোনো কাগজপত্র নেই অনেকের।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, বেপরোয়া বাইক চালকদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে এসব অপরাধ সঙ্গে জড়িত অনেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।