বরগুনা
বেতাগীতে বেড়েছে ডেঙ্গু আক্রান্তের হার
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ডেঙ্গু সংক্রমণ শুধু শহরকেন্দ্রিক হলেও গত এক সপ্তাহে সংক্রমণ ছড়িয়ে গেছে বরগুনার বেতাগী পৌর শহরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। ক্রমেই বেড়ে চলেছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন তিনজন। এসময়ে আরো তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল ডেঙ্গু ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এডিস মশার বিস্তার থাকে অনেক বেশি। এই সময়কে ডেঙ্গুর মৌসুমও বলা হয়।
এ সময়ের তাপমাত্রা, বাতাসের আর্দ্রতা ও বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। কিন্তু অক্টোবরে এসে উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে।
সূত্র মতে, গত অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। বেতাগীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। তবে ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকদের মতে, শহরে কোনো জায়গায় বৃষ্টির কারণে পানি জমেছে এবং সেখান কিছু মশা ডিম পেড়েছে। বৃষ্টির সাথে সাথে টানা রোদ হলে সেখানে দ্রুত সময়ে ডিম থেকে পূর্ণাঙ্গ মশায় পরিণত হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াসমিন বলেন,’ দুই-তিন ঘণ্টার মধ্যেই এমন আবহাওয়ায় ডিম থেকে মশা জীবন পেয়ে যায়। কিন্তু কয়েক দিন টানা বৃষ্টি হলে এবং রোদ না থাকলে ডেঙ্গু সংক্রমণ কমে আসবে। কারণ ওই সময়ে ডিম কোনো এক জায়গায় স্থায়ীভাবে থাকতে পারবে না। আর থাকলেও মশাটি খুব দ্রুত সময়ে পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভ করতে পারবে না। এতে করে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসবে।’
বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এই কমপ্লেক্সে গত দু’দিনে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন তিনজন এবং তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে (শেবাচিম) পাঠানো হয়েছে। এছাড়া গত এক মাসে ২৭ জনকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন,’ এখন যাদের ডেঙ্গু জ্বর হচ্ছে, তাদের অনেকেরই প্রথম দিন থেকেই জ্বরের মাত্রা ১০৩ থেকে ১০৪ ডিগ্রি হয়ে যাচ্ছে। তাপমাত্রা প্রথম দিন থেকেই অনেক বেশি থাকছে। এমনকি তারা এত পরিমাণ দুর্বল
হয়ে যাচ্ছেন, যে কারণে দ্রুততম সময়ে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছে।
আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এর দায়টা আসলে কার জানতে চাইলে এই ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে চিকিৎসার দায়দায়িত্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু মশা কেন হলো বা ডেঙ্গু কেন বাড়ল সেজন্য জবাবদিহি করবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এটা আমাদের নয়।
বেতাগী পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র (প্যানেল মেয়র) মাসুদুর রহমান খান বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে ঢাকা তথ্য পাঠানো হয়েছে। অতি শিগগিরই মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যক্রম শুরু করা হবে।