বরিশাল
ক্লিনিক সীলগালা
বামনায় ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি মায়ের মৃত্যু
মোঃ ওমর ফারুক সাবু, বামনা ॥ বরগুনার বামনা উপজেলা সদরে বেসকারী একটি ক্লিনিকে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ভোর রাতে বামনা উপজেলা সদরের কলেজ রোডস্থ ইসলামিয়া হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার এ ঘটনা ঘটেছে।এমন অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তাকে নিয়ে যৌথ অভিযানে গেলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যাওয়ায় আদালত কাউকে না পয়ে ক্লিনিকটি সীলগালা করে দেয়। এ ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সোনাখালী গ্রামের মোঃ মোস্তফা গাজীর কন্যা ও নাসির উদ্দিনের স্ত্রী মোসা: মোশের্দা বেগমের (৩৪) সোমবার বিকালে সন্তান প্রসবের ব্যাথা শুরু হলে পরিবারের লোকজন তাকে ইসলামিয়া হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিয়ে আসলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সিজারের প্রস্তুতি নেয়। পাশ্ববর্তী পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ মেঃ রাকিবুর রহমানকে খবর দিয়ে এনে ঐ প্রসূতি মায়ের সিজার করান। প্রসূতি মা একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেয়। অপারেশন সম্পন্ন করে ডাঃ আবার তার কর্মস্থলে চলে যায়।
পরবর্তীতে প্রসূতি মায়ের পেটে ব্যাথা বাড়লে এবং আস্তে আস্তে দুর্বল হতে থাকে। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও পরিবারের লোকজন ডাক্তারের সাথে বার বার যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ঔষধ প্রয়োগের পরামর্শ দেয় এবং রোগীকে মঠবাড়িয়া নিয়ে যেতে বলা হয়। মঠবাড়িয়ায় গভীর রাতে রোগী জ্ঞানহীন হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে নিয়া যেতে বলা হয়। বরিশাল নিয়ে যাওয়ার পথে ভান্ডারীয়া নামক স্থানে বসে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়।
পরবর্তীতে লাশ নিয়ে পরিবারের লোকজন অভিযুক্ত ক্লিনিকের সামনে অবস্থান করে প্রতিবাদ জানালে পুলিশ, সাংবাদিক ও প্রশাসন ঘটনাস্থলে পৌছালে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ক্লিনিকটি সীলগালা করে দেয়।
এ ব্যাপারে বামনা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার শেষে অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তীতে আইনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জান বলেন, নির্বাহী কর্তকর্তাসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারলাম ক্লিনিক কর্তপক্ষ পালিয়েছে। যার ফলে ক্লিনিকে কোন বৈধ্য কাগজ-পত্র না পাওয়ায় ক্লিনিকটি সীলগালা করে দেয়া হয়। এ বিষয়ে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ক্লিনিকের ভর্তি রোগীদের সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অন্তরা হালদার বলেন, ঘটনা শুনে ক্লিনিকে যাই এবং কর্তৃপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। ক্লিনিকে ভর্তিকৃত রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার নির্দেশ দেই। পরবর্তীতে ক্লিনিকের বৈধ কাগজ পত্র দেখাতে না পারায় ক্লিনিকটি সীলগালা করে দেই।