বরিশাল
বানারীপাড়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারুকের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক : বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম ফারুক নিজেকে ‘বড় গুন্ডা ও মাস্তান’ অভিহিত করে বক্তব্য দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অ্যাডভোকেট মাওলাদ হোসেন সানা।
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বুধবার (১৫ মে) বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ওই অভিযোগ দেয়া হয়। একইসঙ্গে অভিযোগের অনুলিপি প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সচিব ও বরিশাল জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ দেয়া প্রার্থী হলেন বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাড. মাওলাদ হোসেন সানা। আর অভিযুক্ত প্রার্থী হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, তিনি ৯ মে বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের ফকির বাড়িতে এক কর্মিসভায় বক্তব্যে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আমার চেয়ে বড় মাস্তান কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই, আমার চেয়ে বড় গুন্ডা কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই। প্রার্থীর এ বক্তব্যে মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।’
অভিযোগের বিষয়ে অ্যাড. মাওলাদ হোসেন সানা বলেন, ‘প্রার্থীর এ বক্তব্যে ভাইরাল হওয়ায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। এতে তারা ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে আসবে না। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে না এলে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের প্রতিশ্রুত অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে। ভোটারদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অভিযোগ দেয়া হয়েছে।’
আগামী ৫ জুন চতুর্থ দফায় বানারীপাড়া উপজেলার ভোট। এ ভোটে চেয়ারম্যান পদে তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। তারা হলেন-গোলাম ফারুক, অ্যাড. মাওলাদ হোসেন সানা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জিয়াউল হক মিন্টু।
লিখিত অভিযোগে অ্যাড. মাওলাদ হোসেন সানা উল্লেখ কেেরছেন, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বানারীপাড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার লক্ষ্যে ভোটারদের মাঝে অবস্থান তৈরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সুষ্ঠু ভোটের যে আশ্বাস দিয়েছেন তার প্রমাণ পাওয়া গেছে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে।
কিন্তু বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. গোলাম ফারুক গত ৯ মে বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মাহিযাপোতা এলাকার ফকির বাড়িতে এক কর্মিসভায় বক্তব্য দেন।
বক্তব্যে এক পর্যায়ে বলেছেন ‘আমার চেয়ে বড় মাস্তান কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই, আমার চেয়ে বড় গুন্ডা কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই। মুহূর্তেই এই বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ফলে নষ্ট হচ্ছে নির্বাচনের পরিবেশ। পাশাপাশি ভোটাররা অনেকটা ভীত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই আবার ভোট না দিতে যাবার কথা বলছেন। এমন অবস্থায় আমরা নিজেরাও এই নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছি।
এমন বক্তব্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের যে প্রতিশ্রুতি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করছে বলে মনে করি। পাশাপাশি নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। এমন অবস্থায় মো. গোলাম ফারুক সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে ও আচরণবিধি মানছেন না। ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। পাশাপাশি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে বলে ধারণা করছি।’