বরিশাল
বাকেরগঞ্জে মোটা অংকের টাকা দিয়েও চাকরি পাচ্ছেনা অটোচালক ইমরান
নিজস্ব প্রতিবেদক : চতুর্থ শ্রেণির একটি চাকরীর জন্য সহায়-সম্বল সব বিক্রি করে প্রায় ৮লাখ টাকা দিয়েও চাকরী না পেয়ে এবার আদালতের দারস্থ হলেন অটোচালক ইমরান আহম্মেদ। হতদরিদ্রের এই টাকা চলে গেছে কয়েকজন বিত্তবানের পেটে। ফলে চাকরী ও টাকা দুটোই এখন হারানোর পথে ইমরান। ঘটনাটি বরিশালের বাকেরগঞ্জের চরামদ্দি ইউনিয়নের গুয়াখোলা গ্রামে। এ ব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে একটি মামলা হয়েছে, যার নং ৩৯৮/২৩ইং।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, রাবেয়া খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘চতুর্থ শ্রেণি’র কর্মচারী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর সেখানে অফিস সহায়ক পদে আবেদন করেন স্কুলের জমিদাতার দৌহিত্র ইমরান আহম্মেদ। এরপর ইমরানের সাথে যোগাযোগ করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারুক হাং, সহকারী শিক্ষক আঃ রহমান এবং বিদ্যোৎসাহী সদস্য ছিদ্দিক মাঝি। তারা আট লাখ টাকা ঘুস দাবি করলে প্রথমে পাঁচ লাখ টাকা দেয় ইমরান। কিছুদিন পরে বাকি তিনলাখ টাকার জন্য চাপ দিলে নিজের অটো বিক্রি করে তাও শোধ করে ইমরান। এরপর শুরু হয় টাল বাহানা। অপর এক প্রার্থীর কাছ থেকে আরো বেশী টাকা নিয়ে তাকে নেওয়ার জন্য নানান পথ খুঁজতে থাকে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এক পর্যায়ে ইমরান প্রতিবাদ করলে স্কুলের সহকারী শিক্ষক আঃ রহমান উত্তরা ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা ফেরৎ দেন। বাকি টাকা চাইতে গেলে ইমরানকে নানা হুমকি ধামকি দেওয়া হয়। নিজের পিতার অবসর ভাতার প্রাপ্ত টাকা ও আয়ের একমাত্র সম্বল অটোটি বিক্রি করে স্কুল কর্তৃপক্ষকে দিয়ে এখন নিঃশ্ব প্রায় ইমরান আহম্মেদ। নিরুপায় হয়ে আদালতে মামলা করেন তিনি। মামলাটি ডিবিতে তদন্তনাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে রাবেয়া খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হাওলাদারের মোবাইল নাম্বারে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। টাকা ফেরৎ দেওয়া সহকারী শিক্ষক আঃ রহমান বলেন, ইমরানকে নিয়োগের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়েছে। তবে সেই টাকা তাকে উত্তরা ব্যাংকের মাধ্যমে ফেরৎ দিয়েছি। এছাড়া বাকি তিন লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে কিনা আমি সেই বিষয়ে কিছুই জানিনা। তাছাড়া ঐ নিয়োগের জন্য তার কাছে আমরা টাকা চাইনি। ইমরান নিজেই স্বপ্রণোদিত হয়ে টাকা দিয়েছিল।
বিদ্যোৎসাহী সদস্য ও ইউপি মেম্বার ছিদ্দিক মাঝি বলেন, পাঁচ লক্ষ টাকা লেনদেনের বিষয়ে আমি জানি। বাকি তিন লক্ষ টাকার গল্প ঢাহা মিথ্যা। তবে ঐ নিয়োগে এখনো কাউকে নেওয়া হয়নি। রাবেয়া খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হারুনুর রশীদ খান বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তাছাড়া সেখানে তো কোন ইন্টারভিউই হয়নি। তাই দুর্নীতি করে কাউকে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই।
ভুক্তভোগী ইমরান আহম্মেদ বলেন, সহায় সম্বল সব খুইয়েছি। আমি আমার যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন করেছি। আশা করি আমার চাকুরী আমি পাবো। আর আমার পাওনা বাকি টাকাগুলো বুঝে পেতে চাই।