পটুয়াখালী
বাউফলে ছাত্রলীগ নেতাসহ কিশোর গ্যাং*য়ের ১২ সদস্য আটক, বস্তাভর্তি দেশীয় অ*স্ত্র উদ্ধার
পটুয়াখালীর বাউফলে এক বস্তা দেশীয় অস্ত্রসহ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও তার ছোট ভাইসহ কিশোর গ্যাংয়ের ১০ জন সদস্যকে আটক করেছে বাউফল থানা পুলিশ।
বুধবার (২৩ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার কনকদিয়া বাজারের একটি বাসা থেকে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের (একাংশের) সাধারণ সম্পাদক সিজান কাজী (২৪), তার ছোট ভাই সিয়াম কাজী (১৯) ও কিশোর গ্যাংয়ের ১০ সদস্যসহ মোট ১২ জনকে আটক করে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি প্লাস্টিকের বস্তা ভর্তি বিপুল পরিমাণ রাম দা, গাছ কাটা দা, লোহার রড়, স্টীলের পাইপ ও লাঠিসোঁটা উদ্ধার করা হয়।
আটককৃত উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের (একাংশের) সাধারণ সম্পাদক সিজান কাজী ওই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মিজান কাজীর ছেলে।
ঘটনা জেনে অস্ত্রের পরিমাণ সম্পর্কে এবং অপরাধীদের তথ্য ও ফুটেজ নিতে গণমাধ্যম কর্মীরা রাতে থানায় গেলে পুলিশ নিষেধ করে। থানার ডিউটি অফিসার এএসআই কাউসার জানান, সিনিয়র র্যাংকের অফিসার ছাড়া তাদের মিডিয়ার সাথে কথা বলার অনুমতি নেই। ওসির অনুমতি ছাড়া অস্ত্র বা আসামিদের ছবিও দেয়া যাবে না বলে জানান তিনি। পরে গণমাধ্যম কর্মীরা তথ্যের জন্য বাউফল থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েনের অফিসিয়াল ও ব্যক্তিগত নাম্বারে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে ডিউটি অফিসারের কল একবারেই রিসিভ করেন তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, গত মঙ্গলবার (২১মে) বাউফল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করার পরে কনকদিয়া বাজারে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সমর্থক ডালিমের সাথে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থক সিজানের বাকবিতন্ডা হয়। এর জেরে গতকাল রাতে ডালিমসহ তিনজনকে মারধর করে সিজান ও কিশোর গ্যাং এর কয়েক সদস্য। পরে রাত ১২ টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সিজানের কনকদিয়া বাজারের বাসায় অভিযান চালায় বাউফল থানা পুলিশ। এসময় সিজানের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসহ তাদের আটক করা হয়।
ভুক্তভোগী ডালিম জানান, নির্বাচনের আগেরদিন (সোমবার) রাতে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থক স্কুল শিক্ষক শহিদুল ইসলামকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থক ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। এঘটনায় নির্বাচনের দিন (মঙ্গলবার) গ্রেফতার হয় তিনি। এরপরেই ক্ষিপ্ত হয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠে এমপি গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতা সিজান। আমাদের অনেক সমর্থকদের মারধর করাসহ অস্ত্র দেখিয়ে ঘর-বাড়ি ছাড়ার হুমকি দিতে শুরু করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিজানের পিতা মিজান কাজী বলেন, নির্বাচনে জেতার আনন্দে ওরা পিকনিক খাচ্ছিলো। হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়া পুলিশ ওদের আটক করে। তিনি বলেন, আমরা রাজনীতি করি আমাদের প্রতিপক্ষ আছে, তাই নিজের আত্মরক্ষার জন্য বাসায় লাঠিসোঁটা রাখতেই হয়। আমি বাসায় থাকলে ধরতে পারতো না।
উল্লেখ্য, নির্বাচনী সহিংসতা বা আওয়ামী লীগের ঘরানার কেউ অপরাধে জড়িত হওয়ার কারণে রাতে গ্রেফতার বা আটক হলে সাংবাদিকদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে না পুলিশ। এমনকি অভিযুক্ত’র ভিডিও নিতে নিষেধ করে এবং সাক্ষাৎকার দিতেও অপরাগতা প্রকাশ করেন ওসি। পরে খুব সকালে সাংবাদিকদের না জানিয়ে অভিযুক্তদের আদালতে পাঠিয়ে দেয়। স্কুল শিক্ষককে কুপিয়ে জখম করার দিনেও সাক্ষাৎকার দেয়নি তিনি। এতে স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।