লিড
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারেক আল ইমরান
বরিশাল জেলা ছাত্রদল সভাপতি মিঠু’র উভয় পদ স্থগিত
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন ও সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ড জড়িত থাকার অভিযোগে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠু’র পদ স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি তারেক আল ইমরানকে উক্ত পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক সোহেেলর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগীয়) ও বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠু’র উভয় পদ স্থগিত করা হলো এবং বরিশাল জেলা ছাত্রদল সভাপতির শূন্য পদে সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহতভাবে পরিচালনার নিমিত্তে তারেক আল ইমরানকে উক্ত পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করা হলো। সংগঠনের পক্ষ থেকে পরাবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বে বলবৎ থাকবেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল গতকাল এক কার্য নির্বাহী সভায় এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।
সভাপতি’র পদ স্থগিত হওয়ার ব্যাপারে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে বরিশাল জেলার আওতাধীন ১০ উপজেলা, ৬ পৌর এবং ৪০টি কলেজ ছাত্রদলের কমিটি গঠন নিয়ে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে মাহফুজুল আলম মিঠুর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে গত ২০ নভেম্বর দৈনিক দেশ জনপদ পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অর্থ গ্রহণের বিভিন্ন কথাবার্তা ভাইরাল হয়। এছাড়াও জেলা বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করে আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নসহ দলীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার, দলীয় সিনিয়র নেতাকর্মীদের নিয়ে বাজে মন্তব্য এবং ধর্ষণের শিকার যুবতীকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেয়াসহ একাধিক অভিযোগ তোলা হয়। আর এসব অভিযোগ সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে মিঠু’র উভয় পদ স্থগিত করা হয়েছে বলে জানান দলীয় নেতারা।
দুর্নীতিবাজ মিঠু’র ব্যাপারে অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, বরিশাল জেলা ছাত্রদলের কমিটি গঠনের পর রাজনীতির মাঠে দুই বছর নিরব থাকলেও চাঁদাবাজীতে সরব উপস্থিতি ছিল এই নেতার। মুলাদী উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক রোকনুজ্জামান’র কাছ থেকে পদ পাইয়ে দিতে ৬০ হাজার টাকা উৎকোচ আদায় করা হয়। একইভাবে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক পদ প্রত্যাশী মাসুদ রানার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং ঢাকাস্থ বরিশাল জেলা ছাত্রদলের কমিটির সভাপতি করার আশ্বাস দিয়ে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়েছে মিঠু। এভাবেই অনেক পদ প্রত্যাশী কর্মীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা উৎকোচ নিয়েছে। এছাড়াও গত দুই বছরে আন্দোলনের মাঠে তার উপস্থিতি বলতে গেলে শূন্য। দলীয় কর্মসূচি বাদ দিয়ে নানা অজুহাতে পড়ে থাকতেন ঢাকায়। শুধু তাই নয়, মাহফুজ আলম মিঠুর বিরুদ্ধে দলীয় নেতার হাতের কব্জি কেটে দেয়াসহ আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরের গত ১ অক্টোবর রাতে বরিশাল মহানগর বিএনপি’র সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ারকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে নিজ দলের নেতা কর্মীদের পিটিয়ে আহত করে মিঠু। এদিকে একাধিক ছাত্রদলের নেতাকর্মী বলেন, মিঠু এমনভাবে চলাফেরা করে দেশের একজন মন্ত্রীও এত ভিআইপিভাবে চলে না। তার চলাফেরা প্রাইভেটকারে। সাথে থাকে ওয়াকিটকিসহ তিন জন পিএস।