বরিশাল
বরিশাল কারাগারে বন্দিদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে চোখ ওঠা রোগ!
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দেশে চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলছে। এর প্রভাব দেখা পড়েছে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের কারারক্ষী ও বন্দিদের মাঝেও। এ রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ায় কারাগারের ভিতরে সুস্থ বন্দি ও হাজতিদের মাঝে এখন আতংক বিরাজ করছে। তবে কারা চিকিৎসক জানিয়েছেন হাজতি ও কয়েদি চোখ ওঠা রোগে আক্রান্তদের জন্য পর্যাপ্ত ড্রপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চোখ ওঠা বন্দিদের কারা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে কারাগারে সম্প্রতি ৭ জন কারারক্ষী ও আনুমানিক ৩ জন হাজতী চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে বুধবার বিকেলে নিশ্চিত করেছেন বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. আল মামুন খান। তিনি বলেন, সম্প্রতি তিন জেলেকে আটক করে তাদের সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। এই তিন সাজাপ্রাপ্ত জেলে ও পাহারায় নিযুক্ত ৭ কারারক্ষী চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত। এই রোগে আক্রান্তদের কারাগার থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কারাগার সুত্রে জানা যায়, বর্তমানে কারাগারে ১২০০ হাজতি ও কয়েদি রয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত। তবে ইতিমধ্যে অনেকই সুস্থ হয়ে গেছেন। গত একসপ্তাহ ধরে রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় আবারও আক্রান্ত হচ্ছে হাজতি ও কয়েদিরা। তবে এ থেকে বাদ যাচ্ছে না পাহারায় থাকা কারারক্ষীরা। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে কর্মকর্তারাও আছেন।
কারা হাসপাতালের চিকিৎসক (সহকারী সার্জন) ডা. মোহাম্মদ রাকিবুল আহসান জানিয়েছেন, চোখ ওঠা রোগে আক্রান্তদের কারা হাসপাতাল থেকে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, চোখ ওঠা রোগ যেহেতু ছোঁয়াচে, তাই কারাগারে সুস্থ বন্দিদের যতটা সম্ভব ওয়ার্ডে থাকার জন্য বলা হয়েছে। চোখ ওঠা রোগে আক্রান্তদের জন্য পর্যাপ্ত ড্রপের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. ডি.বি.পাল জানান, দেশে চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলছে। এ রোগকে বলে কনজাংটিভাইটিস। চোখের কনজাংটিভা নামক পর্দার প্রদাহই চোখ ওঠা রোগ। এ রোগটি মূলত ভাইরাসজনিত এবং ছোঁয়াচে। সাধারণত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে চোখ ওঠা রোগ হয়। আবার কখনো কখনো অ্যালার্জির কারণেও এ রোগ হয়ে থাকে। যে মৌসুমে বাতাসে আদ্রতা বেশি থাকে, সে সময় এ রোগটা বেশি হয়। রোগীর ব্যবহৃত জিনিস অন্যরা ব্যবহার করলে এ রোগ ছড়ায়। তিনি আরও বলেন, সাধারণত সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যেই এই রোগ ভালো হয়ে যায়। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে হয়তো ১৫ দিনের মতো সময় লাগতে পারে। প্রয়োজনে চক্ষু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
বরিশাল বিভাগীয় কারা উপ মহাপরিদর্শক মো. টিপু সুলতান বলেন, কারাগারে বন্দিদের মাঝে চোখ ওঠা রোগ তেমন ছড়িয়ে পড়েনি। তবে কিছু বন্দি ও কারারক্ষী আক্রান্ত হয়েছে। কারা চিকিৎসকরা তাদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। আমরা চোখের ড্রপের ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেসব বন্দী এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁরা যেন সুস্থ বন্দিদের সঙ্গে মেলামেশা না করে। তবে এ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই।