বরিশাল
বরিশালে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ: সাংবাদিকসহ আহত ১৫
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল নগরীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে পুলিশি লাঠিচার্জে সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছে অন্তত ১৫। আহত সাংবাদিকদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (৩১ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে নগরীর সদর রোড ও ফজলুল হক অ্যাভিনিউ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনার পর দুই ছাত্রীসহ ১২ জনকে আটক করেছে। বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলার সমন্বয়ক ডা. মনিষা চক্রবর্তী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। সেখানে এসে পুলিশ হামলা করেছে।
নারী শিক্ষার্থীদের আহত করেছে। আমি জানতে পেরেছি অর্ধশত শিক্ষার্থীদের আহত করেছে। অন্তত ১০-১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। যেভাবে গ্রেপ্তার চালিয়েছে, সেটাও ন্যাক্কারজনক। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি করে ডা. মনীষা পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া শিক্ষক বিপ্লব দাস বলেন, শিক্ষার্থীরা ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করেছে। তারা বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে ডেকেছিল। সবাই আমার ছাত্র। সেই কারণে আমি এসে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছি।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা সদর রোড থেকে আদালতের সামনে এসেছে। তখন এসে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করেছে। শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের গোলযোগ না করে এখানে এসে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের অজুহাত ছিল ওরা রাস্তায় আটকে ছিল। তবে শিক্ষক বিপ্লবের দাবি করেন, সকাল থেকে পুলিশ সড়ক আটকে দিয়েছে। সেই নিরীহ ছাত্রদের ওপর পুলিশ ইচ্ছেমতো লাঠিপেটা করেছে। কোনো ছাত্ররা এখানে বিশৃঙ্খলা করছিল না।
তারা রাষ্ট্রবিরোধী কিংবা কোনো ধরনের সংঘাতে ছিল না। তারা নিজেদের দাবি দাওয়া সম্পর্কে শ্লোগান দিচ্ছিল। আর পুলিশেরা লাঠিপেটা করেছে। আনুমানিক শতাধিক ছাত্র আহত হয়েছে। ১০-১২ জন ছাত্র-ছাত্রীকে তারা আটক করেছে।
ঘটনাস্থলে থাকা বরিশাল মহানগর উপ-পুলিশ কমিশনার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, বিরোধী ছাত্রসংগঠনের কিছু নেতা রাস্তা অবরোধ করেছিল। কোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এটা অবরোধ করেছিল। তারা পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা করে, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে তাদের উঠিয়ে দিয়েছি। বেশ কয়েকজনকে আটক করেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে।
উপ-পুলিশ কমিশনারের দাবি এখানে বেশ কিছু শিবিরের ছাত্র ছিল। তাদেরকে আমরা আটক করতে সমর্থ হয়েছি। হামলার শিকার শিক্ষার্থী মৌসুমী বলেন, আমি শিবির না। আমি যশোর ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। পুরুষ পুলিশরা এসে আমাদের ইচ্ছেমতো পিটিয়েছে। কাউকে বাদ দেয়নি। সবাইকে ইচ্ছেমতো মারছে। চুল ধরে লাঠিপেটা করছে। ৫০/৬০ জনকে মারছে।
প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বেলা ১১টার দিকে বরিশাল নগরীর ফকিরবাড়ী রোড থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করে। তখর পুলিশ লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে। ঘটনার ছবি ধারণ করতে যাওয়া দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার আলোকচিত্রি শামীম আহমেদ ও যমুনা টিভির ক্যামেরা পার্সন হৃদয়সহ অন্তত পাঁচ সাংবাদিক পুলিশের লাঠিপেটায় আহত হয়।