বরিশাল
বরিশালে ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিকে ভুল রিপোর্ট, বিপাকে রোগীরা!
ভালো চিকিৎসার প্রথম শর্ত নির্ভুল পরীক্ষা। একজন সচেতন চিকিৎসক নির্ভুল পরীক্ষা ছাড়া কোনোভাবেই চিকিৎসা দিতে পারেন না। বরিশালের ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিকে রোগীর রক্তের পরীক্ষা নিরীক্ষায় বার বার ভুল রিপোর্টের কারণে হয়রানী, আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে রোগীরা। পরীক্ষার ভুল রিপোর্টের কারণে অনেকের প্রাণ সংশয় হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেনে বিষেশজ্ঞ চিকিৎসকরা। বার বার ভুল রিপোর্ট দেয়ার ব্যাপারে ল্যাবএইড বরিশালের ডিজিএম বলেছেন- শত শত রিপোর্টের মধ্যে দু একটা ভুল হতেই পারে। এসব ব্যাপারগুলো রোগীদের সাথে সমঝোতা করা হয়।
বিগত দিনের মতো বরিশালের সদর রোডের ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিকের বিরুদ্ধে রোগীর ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা নির্ণয়ে ভুল রিপোর্ট দেয়া হয়েছে।
এদিকে ল্যাবএইডের পক্ষ থেকে ভুল রিপোর্ট দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, বিষয়টি সিরিয়াসলি দেখা হচ্ছে। যিনি ভুল রিপোর্ট দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে- গত ২৬ মে কলি (ছদ্ম নাম) ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিকে ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করলে রিপোর্ট দেখে ডাক্তারের সন্দেহ হলে অন্য কোন একটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করার কথা বলেন। সেই রোগী চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করে। পরে ২৯ মে ওই রোগী মেডিনোভা থেকে ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করালে ফলাফল আসে শুন্য দশমিক ৯। আর ল্যাবএইডের পরীক্ষায় এসেছিল ২০৬। এতে ল্যাবএইডের পরীক্ষা ভুল বলে প্রমাণিত হয়। পরে বিষয়টি ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হলে তারা রোগীর সাথে সমঝোতা করে। বিষয়টি জানাজানি হলে ল্যাবএইডে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এদিকে এ তথ্য ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ।
ভুল রিপোর্টের ব্যাপারে ল্যাবএইড বরিশালের ডিজিএম আব্দুল জলিল সিকদার বলেন, ওই রোগীর সাথে আমরা সমঝোতা করেছি। ভুল রিপোর্টের বিষয়ে সত্যতা স্বিকার করে বলেন, যিনি ভুল রিপোর্ট দিয়েছেন তার ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এরআগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারী আরেক রোগীকে ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট দেয়া হয়েছিল ল্যাবএইড বরিশাল সদর রোড ব্রাঞ্চ থেকে। তখনও কর্তৃপক্ষ ভুল রিপোর্টের বিষয়টি স্বিকার করেছিল। তখন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে বারবার ভুল রিপোর্ট দেয়ার ঘটনা ঘটছে।
রোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন, ডাক্তারের বুদ্ধিমত্তার জন্য রোগী বেচেঁ গেছে। রিপোর্ট দেখে ডাক্তারের সন্দেহ হওয়ায় পুনরায় টেস্ট করিয়েছি। ডাক্তার যদি ভুল রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র দিলে রোগীর বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেত। তারা ল্যাবএইডের মত প্রতিষ্ঠান থেকে ভুল রিপোর্টের আশা করেন না।
তারা জানিয়েছেন- ল্যাবএইড বরিশাল কর্তৃপক্ষ ভুল স্বিকার করে পুন:রায় নির্ভুল রিপোর্ট দেয়ার আশ্বাষ প্রদান করেছেন।
এ ব্যাপারে সমাজসেবক নাজমুল হক বলেন, নামি দামী ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে বেশি টাকা দিয়ে টেস্ট করিয়েও যদি এমন ভুল রিপোর্ট পাওয়া যায়, তবে তা দুঃখজনক। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এমন স্পর্শকাতর বিষয়গুলো তদারকি করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে বরিশালের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, বড় বড় ডায়াগনস্টিক সেন্টার যদি এভাবে ভুল রিপোর্ট প্রদান করে তা দুঃখজনক। তিনি বিষয়টি খোজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।