উজিরপুর
বরিশালে মা-বাবাকে মারধর করা সেই ছেলেদের গ্রেফতারে অভিযান
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বড় ছেলের স্ত্রীর সাথে ছোট দুই ছেলের সমাজ নিষিদ্ধ (অনৈতিক) সর্ম্পকের প্রতিবাদ করায় দুই ছেলে ও পুত্রবধূ মিলে মা ও বাবাকে জুতাপেটাসহ বেধরক মারধর করে আহত করা হয়েছে। গুরুত্বর আহত মা স্বরস্বতী মন্ডলকে (৬০) উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে হামলাকারী ছেলে ও পুত্রবধূকে গ্রেফতারের জন্য সোমবার সকাল থেকে অভিযান শুরু করেছে থানা পুলিশ। ঘটনাটি জেলার উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের কালবিলা গ্রামের।
হারতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অমল মল্লিক বলেন, দুই ছেলের অব্যাহত মারধরের ঘটনায় কালবিলা গ্রামের বিষেশ্বর মন্ডল ও তার স্ত্রী স্বরস্বতী মন্ডল গত শনিবার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়ের করেন। তখন দুই ছেলেকে নোটিশ করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুই ছেলে তার মাকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কৃষ্ণ কান্ত বাড়ৈ বলেন, প্রায়ই ভাইয়েরা মিলে তার মা ও বাবাকে মারধর করে। এর আগেও মারধর করেছে। সর্বশেষ শনিবার সন্ধ্যায় মারধরের ঘটনায় রবিবার দুপুরে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে। যা দেখে আমি স্থির থাকতে পারিনি। এভাবে মাকে জুতাপেটা করা কেউ সহ্য করবে না। অথচ এই মা সন্তানদের বড় করার জন্য পুরুষের পাশাপাশি অপরের জমিতে কৃষানের কাজ করে ধান লাগিয়েছে। সেই মাকে মারধর করা হয়েছে।
ইউপি সদস্য আরও বরেন, হামলাকারীরা হলো দুই ছেলে অমল মন্ডল (৪০), শ্যামল মন্ডল (২৮) ও অমলের স্ত্রী মুক্তা মন্ডল। এর আগের মারধরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দেয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় পুনরায় তারা স্বরস্বতী মন্ডলকে বেধরক পিটিয়ে আহত করেছে।
সোমবার দুপুরে হাসপাতালে শষ্যাশয়ী আহত স্বরস্বতী মন্ডল বলেন, বড় ছেলে অমল মন্ডলের স্ত্রীর সাথে ছোট ছেলে বিমল ও শ্যামল মন্ডলের অবৈধ মেলামেশা আছে। এনিয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হলে প্রায়ই তারা আমাদের মারধর করে। তিনি আরও বলেন, মারধরের বিচার চেয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দেয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় আমাকে টেনে হেচরে বাড়ি থেকে বেড় করে জুতাপেটাসহ অমানুষিক নির্যাতন করে।
উজিরপুর উপজেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ হামিন সুলতানা বলেন, আহত নারী মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙে পরেছেন। হাসপাতালে তিনি নিজেকে নিরাপদ মনে করছেন।
সোমবার দুপুরে উজিরপুর মডেল থানার ওসি কামরুল হাসান বলেন, রবিবার রাতে ভিডিওটি দেখেই হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে আহত মায়ের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি হামলাকারীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।